বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় এ মামলা করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, সাবেক মন্ত্রীকে ২ নম্বর আসামি এবং ছেলেকে ১ নম্বর আসামি করা হয়।
তিনি বলেন, ছেলের বিরুদ্ধে ২ কোটি ১১ লাখ ২৪ হাজার ৪০০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ১০টি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৭৪ টাকা জমা এবং ১১ কোটি ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ৪১১ টাকা সন্দেহজনক উত্তোলনসহ সর্বমোট ২২ কোটি ৪৩ লাখ ২ হাজার ৯২৫ টাকার সঠিক বৈধ উৎস ও ব্যাখ্যা না থাকায় সন্দেহজনক লেনদেন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। একই সঙ্গে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্জিত অবৈধ অর্থকে বৈধ করার উদ্দেশ্যে ছেলের নামে সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়। ঘটনাস্থল লালমনিরহাট জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা উল্লেখ করা হয়। আর ঘটনার সময়কাল নির্ধারণ করা হয় ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল। মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশন নিজে তদন্ত করবে।
আরও পড়ুন: সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন
তিনি বলেন, সাবেক মন্ত্রীকে গত বৃহস্পতিবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিসের গলিতে মানিক নামে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেন রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী। মন্ত্রীর নামে রংপুর ও ঢাকায় তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে। সে মামলায় তিনি জেলহাজতে আছেন।
নুরুজ্জামান আহমেদ রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট নগরীর রাজা রামমোহন ক্লাবের সামনে গুলিতে নিহত পথচারী মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলার আসামি। ওই ঘটনায় নুরুজ্জামান আহমেদসহ ১২৮ জনের নামে গত ৩১ আগস্ট রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন মুন্নার বাবা কাউনিয়া উপজেলার বরুয়াহাট এলাকার আব্দুল মজিদ।
এ ছাড়াও তার নামে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় ১১ সেপ্টেম্বর ও ২৪ আগস্ট করা দুটি হত্যা মামলা রয়েছে। তিনটি হত্যা মামলায় তিনি এতদিন আত্মগোপন করে ছিলেন।
নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনে তিনবার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একবার প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও একই দপ্তরের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।