বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উৎপাদন শুরু না হওয়ায় সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো সারাদেশে গ্যাস সংকট অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, তারা গ্যাস পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা পবিত্র রমজানে তাদের খাবার রান্না করতে বিকল্প চুলা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে রমজানের প্রথম দিন রবিবার দেশের গ্যাস উৎপাদন প্রায় ৪৫০ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন কিউবিক ফিট পার ডে) কমেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাস ফিল্ড প্রক্রিয়া সিস্টেম লক্ষ্য করেছে যে দুটি উৎপাদন কূপ থেকে বালি বের হচ্ছে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কূপ দুটি থেকে উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
এ ঘটনায় সামগ্রিক গ্যাস উৎপাদনের ওপর বড় প্রভাব পড়েছে। কেননা ত্রুটির ফলে গ্যাস সরবরাহের চাপ কমে যাওয়ায় অনেক অঞ্চলে সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিতে গ্রাহকদের ভোগান্তি
সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর। কারণ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) তাৎক্ষণিক বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় যার ফলে সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় লোডশেডিং দেখা দেয়।
শেভরন ও পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।
শেভরন বাংলাদেশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিবিয়ানা গ্যাস প্ল্যান্টকে পূর্ণ ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অগ্রগতি করেছেন।
উৎপাদন ক্ষেত্রে কিছু অসঙ্গতি দেখা দেয়ার পর ৩ এপ্রিল প্লান্টটির দুটি ট্রেনের মধ্যে দুটি এবং ছয়টি উৎপাদন কূপের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
সরকারি সূত্র জানায়,৩ এপ্রিল দেশে গ্যাস উৎপাদন হয় দুই হাজার ৫২৪ দশমিক চার এমএমসিএফডি। যার মধ্যে বিবিয়ানার ৮৮৬ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি। তবে এ গ্যাস ক্ষেত্রটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ এমএমসিএফডি।
বিপিডিবি এর তথ্যে দেখা যায়, ২০৬৯ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ২০টিরও বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম গ্যাসের স্বল্পতার জন্য বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫ জেলার মানুষ উদ্বিগ্ন
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোবাংলা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শেভরন পরিচালিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের সংকট দেখা দিতে পারে।
গ্যাস সংকটে জনগণের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পেট্রোবাংলা আশা প্রকাশ করেছে, যত দ্রুত সম্ভব রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের কাজ শেষ করে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শেখেরটেক, রায়েরবাজার, ধানমন্ডি, শংকর, কাঁঠালবাগান, মধুবাজার, কলাবাগান, রামপুরা, ওয়ারী, মগবাজার, আরামবাগ, ফকিরাপুল, বনশ্রী, গোপীবাগ, মিরপুর, ইস্কাটনসহ বেশ কিছু এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, তারা খাবার রান্নার জন্য গ্যাস পাচ্ছেন না।
এছাড়া গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকায় সিএনজি চালিত মোটরযানও বিপাকে পড়েছে।