আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে সারাদেশে তিন দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো।
বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী হত্যা, নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই অবরোধ।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তদারকির জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসন গঠনের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত একযোগে অবরোধ পালন করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসী ও অনুসারীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সড়ক, রেল ও নৌপথে তিন দিন আমাদের সর্বাত্মক অবরোধ পালন করা হবে।’
অবরোধের প্রকৃত ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, জেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ, উপজেলার সঙ্গে জেলার যোগাযোগ এবং ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ করা হবে।
তবে সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন তিন দিনের অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমন্বয় জোট, এলডিপি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ লেবার পার্টি ও এনডিএম পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রবিবার সন্ধ্যায় সারাদেশে টানা তিন দিনের অবরোধের পালনের ঘোষণা দেন।
সোমবার জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম একই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতালের ঘোষণা দেয় বিএনপি। বিক্ষিপ্ত সহিংসতার ঘটনার মধ্যে এই হরতাল পালন করে, যাতে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং পরে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।
নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর আধা ঘণ্টা পর কাকরাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দলটির নেতা-কর্মীরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশটি মাঝপথে ভেস্তে যায়।
শনিবারের রাজনৈতিক সহিংসতার প্রেক্ষাপটে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ।