আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কতজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থী ভর্তি ও পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসিকে) এ তথ্য জানাতে হবে।
পাশাপাশি ২০১০ সাল থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন পর্যন্ত কত টাকা গবেষণার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, সে তথ্যও আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।
রুলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ শতাংশ গরিব, মেধাবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগের বিধান বাস্তবায়ন না করায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, ইউজিসি’র চেয়ারম্যানসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডাটাবেজ থেকে জন্ম-মৃত্যুর তথ্য গায়েব, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আগামী ১৪ আগস্ট এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র (ক্যাব) পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বাদী হয়ে রিটটি দায়ের করেন।
রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইনের ৯ এর ৪ উপধারা অনুযায়ী প্রতিবছর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং মেধাবীদের জন্য ৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করার কথা। সেটি করা হচ্ছে না। আইনের ৯ ধারার ৬ উপধারা অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে নির্ধারিত একটি সুনির্দিষ্ট অংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে গবেষণার জন্য রাখার কথা। এই হিসাবগুলো পাঠাতে হবে ইউসিজির কাছে। ইউজিসি পরে এই রিপোর্ট পাঠাবে মন্ত্রণালয়ের কাছে। পরে মন্ত্রণালয় পাঠাবে সংসদীয় কমিটির কাছে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আমরা কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সেটি জানার জন্য চেষ্টা করেছি। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে ২০১০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি কোটা সংরক্ষণের ও গবেষণার কাজে টাকা বরাদ্দের শর্ত পূরণ করেনি।
একই আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী সরকারের কর্তব্য হচ্ছে আইন ভঙ্গ হলে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল এবং সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করবে। ধারা ৪৯ এ বলা হয়েছে এগুলো ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৫ বছরের কারাদণ্ড ১০ লাখ টাকা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের ব্যবস্থা আছে। বিগত বছরগুলোতে এসব কারণে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও আমরা শুনিনি। এ কারণে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন রিট দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সহিংসতা: প্রধান বিচারপতি বিবৃতি না দেয়ায় ফখরুলের ক্ষোভ
ই-কমার্সের মাধ্যমে কত টাকা পাচার ও পাচারকারীদের তথ্য জানতে চান হাইকোর্ট