গত ১৮ মে হাইকোর্টের ভার্চুয়াল আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর তারা কারামুক্তিও পেয়েছেন।
মিথ্যা-জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জামিন নেয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ নজরে আনলে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ তাদের জামিন বাতিল করেছেন।
একইসাথে এক সপ্তাহের মধ্যে আসামিদেরকে আত্মসমর্পণের এবং আত্মসমর্পণ না করলে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে খুলনার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি মিথ্যা ও জাল কাগজ-পত্র দাখিল করায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামালকে ভার্চুয়াল আদালতে শুনানি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এভাবে জাল-কাগজপত্র দাখিল করে জামিন নেয়ার ব্যাপারে ওই আইনজীবীকে এক সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
জামিন বাতিল করে যে পাঁচ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন- লুৎফর শেখ, সোহাগ শেখ, জুয়েল শেখ, সেলিম শেখ ও আবদুল্লাহ মোল্লা।
বুধবার জামিন বাতিল আবেদনের ওপর শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
পরে ড. বশিরউল্লাহ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিরা জাল কাগজ-পত্র দাখিল করে জামিন নিয়েছিলেন। জামিন আবেদনে বলেছিলেন, তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু এজাহারে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। আমরা বিষয়টি জানতে পেরে আবেদন করি। জামিন বাতিলের শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দিয়েছেন। এদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামালও শুনানিতে অংশ নেন।
জানা যায়, গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর খুলনার দিঘলিয়া থানায় টিপু শেখ হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করে নিহতের ছেলে আলমগীর শেখ। মামলায় আ. সাত্তার শেখসহ মোট ৩২জন আসামির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পদ্মবিলা থানার গাজীরহাট বাজারের পাশে কাঠালতলা ভ্যান স্ট্যান্ডে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে টিপু শেখকে আসামিরা হত্যা করে বলে উল্লেখ করা হয়।
এ মামলায় হাইকোর্টের ভার্চুয়াল আদালতে জামিন আবেদন দাখিল করেন উপরোক্ত পাঁচ আসামি। জামিন আবেদনে বলা হয়, এজাহার অনুযায়ী আসামিদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদেরকে শুধু পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাদের নাম এজাহারে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া তারাই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এসব দিক বিবেচনা করে জামিন চাওয়া হয় আবেদনে। তাদের পক্ষে আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামাল শুনানি করেন। গত ১৮ মে ভার্চুয়াল আদালত শুনানি গ্রহণ করে ৫ আসামিকে নিয়মিত আদালত চালু হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মামলার এজাহারে এই পাঁচ আসামির প্রত্যেকের হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া ও ভূমিকার কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। যেটা গোপন করে হাইকোর্টের কাছে জামিন চান আসামি পক্ষ।