ভোলার দৌলতখান উপজেলায় জুয়া খেলার সময় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া যুবক নোমানের লাশ চার দিন পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে তার ভাসমান লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নোমান মাছঘাটের একজন শ্রমিক ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঘোড়াঘাটে ভুট্টাখেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
স্থানীয় ও বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল মাছঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় নোমানসহ বেশ কয়েকজন জুয়া খেলছিল। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য জুয়ার আসরে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে নোমানসহ আরও কয়েকজন পড়ে যায়।
তাদের মধ্যে সবাই সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারলেও, নোমান উঠে আসতে পারেনি। এরপরই নিখোঁজ হয় নোমান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নোমান নদীতে পড়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাকে উদ্ধার না করে তাকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করতে থাকে।
তাদের ধারণা পুলিশের ইটের আঘাতে নোমান নদী থেকে সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারেনি।
নিখোঁজ নোমানের সন্ধানে দৌলতখান ফায়ার সার্ভিসের টিম ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল চেষ্টা চালিয়ে তার কোন সন্ধান পায়নি।
নোমানের স্বজনরা মেঘনা নদীতে ট্রলার যোগে নোমানের সন্ধান পেতে মাইকিংও করেছেন। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। অবশেষে রবিবার সকালে দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল মাছঘাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যর মামলা করেন।
ওই ঘটনায় লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহুরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) মো. এনায়েত হোসেন এবং ভোলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম কামরুল।
এছাড়াও নিখোঁজের পর থেকে এ ঘটনায় কনস্টেবল মো. রাসেল ও সজীব নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং দৌলতখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বরূপ কান্তি পাল ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সোহেল রানাকে ক্লোজড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধানখেত থেকে কোরআন হাফেজের লাশ উদ্ধার