আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকার মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করে উন্নত জীবন দেয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গরিব, এতিম ও অসহায়দের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মোবাইল ফোন কলে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ও বক্তব্য রাখেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হত্যা ও ৪৫তম জাতীয় শোক দিবসে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে কৃষক লীগ স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা কৃষক লীগের নেতা-কর্মীদের জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে ক্ষুধা ও দ্রারিদ্রমুক্ত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালির কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবং ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে জাতির পিতার স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল এবং দেশের জনগণ জাতির পিতাকে হত্যার পর তাদের সকল সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলেছিল।
তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি চক্র যারা এ স্বাধীনতা চায়নি এবং এতে বিশ্বাসও করতো না, এমনকি, স্বাধীনতা অর্জনে কোনোরূপ সহযোগিতা পর্যন্ত করেনি, তারাই ষড়যন্ত্র করে জাতীর পিতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিনি এবং তার ছোট বোন বিদেশে থাকায় ১৫ আগস্টের সেই ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যান।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে জাতির পিতার গতিশীল নেতৃত্বে দেশ যখন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সে সময়ই তাকে হত্যা করা হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়মী লীগ সরকার গঠন করে, তবে ২০০১-২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশ এক অন্ধকার যুগের মধ্যে ছিল। ‘২০০৯ সালে আমরা জনগণের বিশাল ম্যান্ডেট নিয়ে আবার ক্ষমতায় আসি এবং তার পর থেকে আমরা কৃষক-শ্রমিকসহ সকল শ্রেনির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল।
তবে, দুর্ভাগ্যক্রমে এ সময়ে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি আঘাত হানে এবং এ ভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবীর অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে, যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ থেকে বাংলাদেশও বাদ যায়নি এবং এ অদৃশ্য শত্রু পুরো দেশকে অচল করে দিয়েছে।
মুমূর্ষু রোগীদের জীবন বাঁচাতে জাতির পিতার স্মরণে অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য কৃষক লীগকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
কৃষকদের ধান কাটা, জনগণের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফনের কাজে সহায়তা করার জন্য কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগ ও এর অংঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনলাইনে এ কর্মসূচিতে যুক্ত হন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম-সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এতে বক্তব্য রাখেন।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এর সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি বারী বক্তব্য রাখেন।