পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নোলিন হাইজারকে রাখাইনে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির উন্নয়নে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি অন্যান্য সকল অংশীদারদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আরও বাড়ানোর অনুরোধ করেন।
মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে বিশেষ দূতের সঙ্গে অনুষ্ঠিত একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ অনুরোধ করেন তিনি।
তিনি বিশেষ করে রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তা দ্রুত সমাধানের ওপর জোর দেন।
রোহিঙ্গা বিষয়ে সাধারণ পরিষদ এবং নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত বিভিন্ন রেজুলেশনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশেষ দূতকে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বহুমুখী কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে এবং আসিয়ান নেতৃত্বসহ সকল বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুযোগ দেয়া হলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হতে পারে এবং তাদের আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে ওআইসি সদস্যদের দায়িত্ব নিতে হবে: মোমেন
কক্সবাজার ও ভাসানচরে অবস্থিত অস্থায়ী ক্যাম্পে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তনসহ রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিসমূহের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ প্রেক্ষিতে তিনি বিশেষ দূতকে রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের সবচেয়ে জরুরি চাহিদা যেমন: খাদ্য, শিক্ষা, আশ্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা মেটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ করতে কাজ করার আহ্বান জানান।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহ যাতে বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্য ও সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর গুরত্বারোপ করেন।
তিনি বিশেষ দূতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও ভূমিকা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করেন এবং তাকে বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন। বিনিময়ে বিশেষ দূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
বৈঠকের পরে মঙ্গলবার বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের রাজা উইলেম-আলেকজান্ডার এবং তাজিকিস্তান প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রহমানের সঙ্গে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের নৈশভোজে যোগদান করেন।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী ২২ থেকে ২৪ মার্চ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।