বাংলাদেশ দূতাবাস, লিসবন যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে মঙ্গলবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে।
এই উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পর্তুগালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ও দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ দূতাবাস, লিসবন-এর চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আলমগীর হোসেন দূতাবাসের অনান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর পদক প্রাপ্তির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ওপর এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় দূতাবাসের কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা অংশগ্রহণ করেন।
আলমগীর হোসেন তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হলো জুলিও কুরি শান্তি পদক, যা বাংলাদেশের জন্য প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক সম্মান।
এই পদক অর্জন বিশ্বদরবারে বাঙালি জাতিকে গৌরবান্বিত করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি তার বক্তব্যে পদকটির গুরত্ব ও ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন অগ্রদূত; অন্যায়, অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর।
‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ বঙ্গবন্ধু ঘোষিত শান্তির এই বাণী, বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতিতে বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক।
চার্জ দ্য অ্যাফয়ার্স বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যেমন ভূমিকা রেখেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
মিয়ানমারে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বদরবারে শান্তি ও মানবতার যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তারও উল্লেখ করেন তিনি।
তাছাড়া, বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যুতে যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসার, যুদ্ধ ও সংঘাত নিরসন, দক্ষিণ এশিয়ায় পারমানবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগ ও স্বীকৃতির কথা উল্লেখ করেন।
আলোচনা শেষে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত