শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
বুধবার গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের কাছে টাকা আছে। গত তিন মাসে দুই বিলিয়ন করে রেমিট্যান্স এসেছে। যেটা পয়েন্ট টু পয়েন্ট ৩৮ শতাংশ।’
এছাড়া এই দুই বিলিয়নই গ্রামের অর্থনীতিতে অবদান রাখে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
তিনি বলেন, ‘এই রেমিট্যান্সটা শহরে আসে না, কোনো ব্যাংকে আসে না, গ্রামে চলে যায়। গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা এটার কারণেও বাড়ে।'
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গ্রামের মানুষ যারা উৎপাদন করে তারা কিন্তু শহরের নির্ধারিত আয়ের লোকের চেয়ে ভালো আছে।’
এছাড়া গ্রামে যারা অটো চালায়, গরু বা ছাগল পালন করে তাদের কিন্তু মাল্টিপল ইকনোমিক অ্যাক্টিভিটি আছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নির্ধারিত আয়ের লোকগুলো খুব বেশি চাপে আছে। তাদের জন্য টিসিবিসহ অন্যান্য কর্মসূচি আছে।’
আরও পড়ুন: নিত্যপণ্য আমদানি করতে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গেও চুক্তি হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে পেরেছি। বিশেষ করে চিনি ও তেল’
এই চিনি ও তেলের সরবরাহ ও দাম গত ৫ থেকে ৬ মাস স্থিতিশীল আছে বলে জানান আহসানুল ইসলাম টিটু।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং করে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধাগুলো যাতে অব্যাহত থাকে। সেজন্য ডব্লিউটিওসহ বিভিন্ন জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিগুলো করছি।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোটা ফ্রি, ডিউটি ফ্রি সুবিধা যাতে অব্যাহত থাকে। সেই ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।’
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট করবেন। চীনের সঙ্গে আমাদের স্টাডি সম্পূর্ণ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চায়না একটি এফটিএ করার জন্য উদ্যোগী। আসিয়ান কান্ট্রিগুলোর সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, টিসিবির পণ্য বিক্রি নির্দিষ্ট স্থানে দোকানভিত্তিক কিভাবে করা যায়, সেটি আমরা পর্যায়ক্রমে করে যাচ্ছি।’
মন্ত্রণালয়ের দপ্তরগুলোতে গতিশীলতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ট্যারিফ কমিশনকে আমরা ঢেলে সাজাতে চাচ্ছি। আমরা যখন উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাব ডব্লিউটিওর রুলস অনুযায়ী আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা রাখতে পারব না। অন্যের মার্কেট পেতে চাইলে আমাদের মার্কেট ওপেন করতে হবে। তখন আমাদের ট্যারিফ রেশনালাইজ করতে হবে। সেটা করতে হলে আমাদের ট্যারিফ কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’
এবারও ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনেননি, চামড়ার দাম পাওয়া যায়নি- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চামড়ার ব্যাপারে প্রতি বছরই হয়, আমিও দেখি। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা আমাদের প্রথম বছর ছিল। আমরা চামড়ার দাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলাম- ঢাকার বাইরে একটি গরুর লবণযুক্ত চামড়া ১ হাজার টাকা আর ঢাকায় ১ হাজার ২০০ টাকা। আমরা এটা মনিটরিং করব। মনিটরিং করে যে গ্যাপগুলো আছে, সেগুলো আগামী বছর পূরণ হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘৬৪ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন জেলায় কত চামড়া কেনা হলো, কতগুলো সংরক্ষিত, কতগুলো অবিক্রিত রয়েছে। এ বিষয়ে একটা পরিসংখ্যান নেব। তবে এ বিষয়ে দায় হলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের। এক্ষেত্রে আমরা শুধু মনিটরিংই করতে পারি, কাউকে কেনায় বাধ্য করা হলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাজ। এর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় যুক্ত রয়েছে। সমন্বয়টা আমরা করব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলব।’
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির বিকল্প ব্যবস্থা হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির বিকল্প ব্যবস্থা হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী