খেতের ফসল রক্ষা করতে গিয়ে শেরপুরের শ্রীবরদীতে বন্য হাতির আক্রমণে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার হাতিবর টিলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল হামিদ (৫০) ওই এলাকার ছামেদ আলীর ছেলে।
এ নিয়ে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে শেরপুরের পাহাড়ি জনপদে বন্য হাতির আক্রমণে তিন কৃষক নিহত হলেন।
এর আগে হাতির আক্রমনে গত ১৪ এপ্রিল শ্রীবরদীর জুলগাঁও এলাকায় আব্দুল করিম (৩৫) এবং ২৬ এপ্রিল নালিতাবাড়ি উপজেলার পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের বিজয় সাংমা (৫২) নামে আরও দুই কৃষক প্রাণ হারান।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে যুবক নিহত
এই কৃষকরা সবাই বন্য হাতির কবল থেকে আধপাকা বোরো ধানখেত পাহারা দেওয়ার সময় উন্মত্ত হাতির কবলে পড়ে নিহত হন।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় শ্রীবরদী সীমান্তে বন্যহাতির ৪০/৫০ টির একটি দল শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুড়ী রেঞ্জ এলাকার হালুয়াহাটি গ্রামের বোরো ধানখেতে নেমে আসে এবং পাকা ধান বিনষ্ট করে।
এ সময় ধানখেত বাঁচাতে এলাকাবাসী হাতি তাড়াতে লাঠি-মশাল নিয়ে হাতির দলকে ধাওয়া করে। এতে ক্ষুব্ধ হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে হাতিবর টিলাপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল হামিদ গুরুতর আহত হন।
এলাকাবাসী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হামিদকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. নোমান।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুর হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ধানখেতে বন্যহাতির দল নেমে এলে হাতি তাড়াতে গিয়ে হাতির আক্রমণে কৃষক আব্দুল হামিদের মৃত্যু ঘটেছে।
বন বিভাগের বালিজুড়ীর রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু হাতির দলকে তাড়াতে গিয়ে মানুষ মৃত্যুর মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে পাহাড়ি জনপদে বনবিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যাতে হাতির দলকে উত্যক্ত করা না হয়। এজন্য এলাকায় এলাকায় এলিফেন্ট রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়মানুযায়ী আবেদনের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।