করোনাকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে দেশের শ্রমঘন এলাকা ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের উপ-মহাপরিদর্শকদের গৃহিত পদক্ষেপ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করে কারখানার উৎপাদন সচল রাখতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, মালিক এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ২৩টি বিশেষ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি নিরলস কাজ করছে।
আরও পড়ুন: ঈদের আগেই চীন থেকে ভ্যাকসিন পেতে আশাবাদী ঢাকা
কমিটির সদস্যরা আইএলও এর সহযোগিতায় তৈরি করা পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশিকা এবং সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক পোস্টার কারখানা পর্যায়ে বিলি করছে। এর সাথে শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে শ্রমঘন এলাকায় মাইকিং এর ব্যবস্থা করেছেন।
করোনাকালীন শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখতে মাঠ পর্যায়ে পদক্ষেপ সম্পর্কে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের গাজীপুরের উপ-মহাপরিদর্শক আহমেদ বেলাল জানান, গাজীপুরে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ধরনের কারখানায় প্রায় ৩১ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। বিশাল সংখ্যক শ্রমিক কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রতি পালনে নিজেরা সচেতন না হলে তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানানো বিরাট চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন: সম্ভাব্য যেকোনও উপায়ে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
করোনা সংক্রমণের প্রথম থেকেই প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং সচিব কে এম আব্দুস সালামের নির্দেশ অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছেন।
মালিক শ্রমিকদের সাথে নিয়মিত আলোচনা করেন। এ বিষয়ে মালিক-শ্রমিক সকলের সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: 'জনসন অ্যান্ড জনসন'-র করোনাভাইরাসের টিকা কিনবে না অস্ট্রেলিয়া
এ বিষয়ে ঢাকার উপমহাপরিদর্শক একে এম সালাউদ্দিন জানান, ঢাকার শ্রমঘন এলাকা অনেক বড় বিশেষ করে সাভার আশুলিয়া এলাকার কারখানাগুলোতে লাখ লাখ লোক কাজ করেন। আমাদের পরিদর্শকরা কারখানা পর্যায়ে করোনা সচেতনতায় বিরামহীন কাজ করছেন। শ্রমিকদের মাস্ক পরা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কাজ করার বিষয়ে মালিক শ্রমিক সকলকে উৎসাহ দিচ্ছেন, পোস্টার বিলি করছেন। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দীন আহমেদ প্রতিনিয়ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। তারা নিজেরা গত ১৮ তারিখে ঢাকা এবং গাজীপুরের বেশকিছু কারখানা পরিদর্শন করে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
সকলের সহযোগিতায় এ অঞ্চলের করোনা পরিস্থিতি ভাল রয়েছে বলে তিনি জানান।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে উপ-মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল শাকিব মোবাররাত জানান, কারখানা পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি পালনে শ্রমিকরা আন্তরিক। শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে করোনাকালীন বিশেষ শ্রম পরিদর্শনের ব্যবস্থা করছেন, লিফলেট বিতরণ করছেন। কারখানা মালিকগণও এ বিষয়ে বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নেয়ায় শ্রমিকদের মাঝে সংক্রমণ নেই।
স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনে শ্রমিকরাও আগের থেকে এখন অনেক সচেতন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছর করোনা সংক্রমণের শুরুতেই শ্রম প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সারা দেশে ২৩ টি বিশেষ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর থেকে বেশ কয়েকটি জুম মিটিংয়ে প্রতিমন্ত্রী কমিটির সদস্যদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন।