তিনি বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সম্প্রতি জানিয়েছেন যে ভ্যাকসিন ঈদের আগেই ঢাকায় আসা শুরু করবে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নির্দিষ্ট করে জানিয়েছেন ১০ মে ভ্যাকসিন আসবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে চীন ও রাশিয়ার সংযোগ স্থাপন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে ড. মোমেন ইউএনবিকে বলেন, ‘কখন এবং কত ডোজ টিকা কীভাবে আসবে তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। তারা জানে কখন এটা আমাদের দরকার।’
মন্ত্রী বলেন, চীনে ৫ দিনের মে দিবসের ছুটি চলছে যা ৫ মে শেষ হবে। এই ছুটির কারণে চীনে সবকিছু বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ভ্যাকসিন পেতে রাশিয়া ও আমেরিকার সাথে যোগাযোগ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অর্ডারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন উৎপাদন হওয়ায় কিছু সময় লাগবে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বলেছেন, করোনাভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষায় সরকার যেকোনো মূল্যে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে। ‘আমরা আরও ভ্যাকসিন আনছি, কত টাকা লাগবে সেটা কোনো বিষয় নয়।’
বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি ছাড়াও চীন ৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে সরবরাহ করবে।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে উৎপাদিত কোভিশিল্ড ব্র্যান্ড নামে বিক্রিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছে। এটি জানুয়ারি থেকে শুরু করে ছয় মাসের জন্য তিন কোটি ডোজ সরবরাহের জন্য স্থানীয় ফার্মা জায়ান্ট বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সাথে একটি চুক্তি করেছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
ভারতে বর্তমান উচ্চ চাহিদা থাকায় ভ্যাকসিনের বাকি ডোজের সরবরাহ স্থগিত রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের উপহার হিসেবে বাংলাদেশ কোভিশিল্ডের ৩৩ লাখ ডোজ পেয়েছে। সামগ্রিকভাবে, যে কোনও দেশে ভারত পাঠানো সর্বাধিক পরিমাণ হলো ১ কোটি ৩ লাখ ডোজ।
যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ স্টক বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা শুরু করবে।
আরও পড়ুন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ২১ লাখ টিকা আসছে
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আগামী কয়েক মাসে রপ্তানির জন্য ৬০ মিলিয়ন ডোজ পর্যাপ্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ।
ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভ্যাকসিন চেয়েছি। আমরা অবশ্যই এটিকে স্বাগত জানাব।’
তিনি জানান, তারা কোনও চিঠির মাধ্যমে (আনুষ্ঠানিক উপায়) নয় বরং প্রকাশ্যে জানতে পেরেছেন যে আমেরিকা ভারত এবং ব্রাজিলকে ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিবে।
মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশের সবাইকে টিকা দেয়া সম্পন্ন করার পর অবশিষ্ট টিকাগুলো বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে সরবরাহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আশ্বাস দিয়েছে।
‘জলবায়ু সম্পর্কিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জন কেরি সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বাস দিতে পারি যে যখন আমরা বেশিরভাগ নাগরিককে ভ্যাকসিন দেয়ার শেষ পর্যায়ে পৌঁছতে পারব তখন অবশিষ্ট ভ্যাকসিনগুলো আমরা যে কোনও উপায়ে বিতরণ করব।
ডিজিটাল যুগে কূটনীতি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কোভিড মহামারির মধ্যে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ বিঘ্ন ঘটলেও তারা ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহার করে তাদের কূটনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে আমরা ওয়েবিনার এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যম অবিচ্ছিন্নভাবে সবার সাথে যোগাযোগ করছি।’
ড. মোমেন অবশ্য বলছেন যে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ব্যক্তিগতভাবে বৈঠক ও আলোচনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে ব্যক্তিগত বৈঠক আলোচনার জন্য অনেক ভালো উপায়।