জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ঘোষণায় এটি কীভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে এবং নতুন বাংলাদেশ রূপকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রত্যাশা পূরণ করবে তার রূপরেখা দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কথা উল্লেখ করে বলেন, পুরনো ধাঁচের সমস্যা এড়াতে নির্বাচনের আগেই কিছু সংস্কার কাজ শেষ করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় এসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ‘সরকার যদি এখন নির্বাচন করে তাহলে তা হবে সেকেলে এবং পুরোনো ধাঁচের সব সমস্যা ফিরে আসবে।’
অধ্যাপক ইউনূস নতুন বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। ‘আমরাও নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আগ্রহী।’
ড. ইউনূস কূটনীতিকদের বলেন, সরকারের দু'টি দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন- নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করা।
তিনি বলেন, ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন কমিশন রয়েছে এবং সরকার এই মাসের শেষ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এই কমিশনগুলোর কাছ থেকে প্রতিবেদন আশা করছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নির্বাচনি প্রক্রিয়া সংস্কার করা হলে তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হবেন। ‘আমরা সেদিকেই যাচ্ছি ...যেদিকে দুটি প্রক্রিয়া আমাদের একই লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারতের এফওসি বৈঠক অনুষ্ঠিত
শুরুতেই অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ এটি বিজয়ের মাস। তিনি বলেন, 'আপনাদের সবাইকে একসঙ্গে পাওয়ার জন্য এটি একটি বিশেষ উপলক্ষ।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রতি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থনের প্রতিফলন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু অপপ্রচার ও ভুল তথ্য প্রচার সত্ত্বেও বাংলাদেশে ঐক্যের একটি দৃঢ়তা
বিদ্যমান। এ সময় পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রদূতরা হলেন-
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্তিয়াগা ওচোয়া ডি চিনচেত্রু, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ ডেলিগেশনের প্রধান ও রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিডিএ এআই আন্দ্রে কার্সটেন্স।
নয়াদিল্লিতে ইইউ মিশনের প্রধান/প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে নিযুক্ত বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত দিদিয়ের ভ্যান্ডারহাসেল্ট, বাংলাদেশে নিযুক্ত বুলগেরিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলাই ইয়ানকভ, বাংলাদেশে নিযুক্ত এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত মারজে লুপ, বাংলাদেশে নিযুক্ত লুক্সেমবার্গের রাষ্ট্রদূত পেগি ফ্রান্টজেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রদূত রোবার্ট ম্যাক্সিয়ান, বাংলাদেশে নিযুক্ত সাইপ্রাসের মনোনীত হাইকমিশনার এভাগোরাস ভ্রিওনাইডস, নয়া দিল্লিতে হাঙ্গেরি দূতাবাসের ঢাকা অফিসের প্রথম সচিব গ্যাবর জুকস, নয়া দিল্লিতে পোল্যান্ড দূতাবাসের কাউন্সেলর জারোস্লাভ জেরজি গ্রোবেরেক, নয়া দিল্লিতে পর্তুগাল দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন সোফিয়া বাতালহা, নয়া দিল্লিতে স্লোভেনিয়া দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ইরমা সিনকোভেক, নয়া দিল্লিতে রোমানিয়া দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব রুক্সান্দ্রা সিওকানেলিয়া।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দেখতে চায় ইইউ