দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য বিমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা অর্জনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে।’
গতকাল রাতে ঢাকায় 'রিস্ক ইনফরমড আর্লি একশন পার্টনারশীপ -কমিটমেন্ট টু অ্যাকশন' শীর্ষক ভার্চুয়াল এক আলোচানা তিনি এসব কথা বলেন ।
এনামুর রহমান বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ঘনবসতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগের মোকাবিলা করতে হয় । এছাড়া ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী ও বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকি-হ্রাস ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়ক কার্যক্রমকে সমন্বিত, লক্ষ্যভিত্তিক ও শক্তিশালী করা এবং সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১১, মৃতদেহ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০১৬, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) ২০১৯ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দলিল প্রণীত হয়েছে ।
এর মাধ্যমে বিভিন্ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রতিবন্ধী, নারী, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুসহ দুর্গত জনগোষ্ঠীর চাহিদা নিরূপন ও বাস্তবায়ন । ২০১৫-২০৩০ সাল মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত হয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)। উল্লেখিত আইন, বিধি, পরিকল্পনা ও নীতিমালার আলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক এর লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ।
এনামুর রহমান বলেন, জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, আসন্ন দুর্যোগের কবল থেকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বেতার, টেলিভিশন এবং স্থানীয়ভাবে দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি দ্রুত ও অধিকতর কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স চালু করা হয়েছে । মোবাইল ফোন নম্বর থেকে ১০৯০(টোল ফ্রি) নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগের আগাম বার্তা পেয়ে জনগণ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।
এ বার্তাকে আরও অধিকতর জনবান্ধব করার লক্ষ্যে কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে স্থানীয় ভাষায় বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
যুক্তরাজ্যের মিনিস্টার ফর বিজনেস এনার্জি এন্ড ক্লিন গ্রোথ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন অন এডাপ্টেশন এন্ড রেজিল্যান্স ফর দ্যা কপ-২৬ প্রেসিডেন্সি আনা মেরি ট্রেভেল্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জ্যামাইকা'র হাউজিং, আরবান রিনিউওয়াল, এনভায়রনমেন্ট এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ বিষয়কমন্ত্রী পার্নেল পি চার্লস জেআর, জাপানের গ্লোবাল এনভারমেন্টাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার কোনডো টমোহিরো, ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ক্লাইমেট অ্যাম্বেসেডর স্টেফানি ক্রোজাট, জার্মানির পার্লামেন্টারি স্টেট সেক্রেটারি টু দ্যা ফেডারেল মিনিস্টার ফর ইকনোমিক কো-অপারেশন অন্ড ডেভেলপমেন্ট মারিয়া ফ্লাসবার্থ, মিশরের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর অফ এনভায়রনমেন্ট এন্ড সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের অ্যাম্বেসেডর মোহাম্মদ গাদ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বক্তব্য দেন।