পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, গত ১৩ বছরে সারাদেশে নদী ভাঙনের পরিমাণ সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর থেকে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরে নেমেছে।
তিনি বলেন, সারাদেশের নদী ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ করছে সরকার। আর সরকারের পদক্ষেপের কারণেই সারাদেশে নদীভাঙন কমে এসেছে।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পওর বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধু চট্টগ্রামেই আট হাজার ৩০০ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬ টি প্রকল্প হয়। যার সাতটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলোও সমাপ্তির পথে।
আরও পড়ুন: যেকোনো মূল্যে মেঘনা থেকে চাঁদপুরকে রক্ষা করা হবে: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও সাতটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। যার প্রকল্প ব্যয় প্রায় ছয় হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতার অনেকাংশেই কমে আসবে। এছাড়া কাজ যেন গুনগত মান ঠিক রেখে হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কাজের ব্যাপারে কোনো প্রকার গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন, সেজন্য তিনি আগামীর বাসযোগ্য বিশ্বমানের সুবিধা সম্বলিত বাংলাদেশ গড়তে চান। এজন্য তিনি দূরদর্শী পদক্ষেপ নেন। সেজন্য তিনি ডেল্টাপ্লান-২১০০ বাস্তবায়নেরও ঘোষণা দিয়েছেন। আর এই মহাপরিকল্পনার সিংহভাগ কাজই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে নদী ভাঙন ও জলাবদ্ধতার কোনো সমস্যাই থাকবে না। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
উপমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে স্থায়ী প্রকল্প নেয়া হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ অনেকাংশে জলাবদ্ধতা ও নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। আর এর সুফল কয়েক বছরের মধ্যে মিলবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্প করা হচ্ছে। উপকূল অঞ্চলে প্রতিটি বাঁধ প্রশস্ত ও উঁচু করা হচ্ছে, বনায়ন করা হচ্ছে।
আর এসব স্থায়ী প্রকল্পে নদী খনন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবলও বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল, কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইকোনমিক জোন, মহেশখালী ইকোনমিক জোন, মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল, মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, মহেশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিশ্বমানের রেল সড়ক ও রেল স্টেশন হচ্ছে। এছাড়া তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছেন।
এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খ ম জুলফিকার সহ নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মেঘনা সেতু হলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী