দেশের সাহায্য বন্ধ করে লেখা বিএনপি মহাসচিবের চিঠির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেন, তারা দেশের সাহায্য বন্ধের জন্য চিঠি লিখেছে। এটা যদি ইউরোপের কোনো দেশে হতো তাৎক্ষণিকভাবে মির্জা ফখরুল ও বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা হতো। তিনি রাজনীতিতে অযোগ্য হতেন। তার বিচার হতো।
তিনি বলেন, আমি নিজেও মনে করি, এই যে দেশের বিরুদ্ধে তিনি চিঠি দিলেন, সাহায্য বন্ধের কথা বললেন, এটার জন্য তার বিচার হওয়া দরকার বিএনপিরও বিচার হওয়া দরকার।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে, রপ্তানি বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য, দেশের ভাবমূর্তিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য অর্থাৎ বিদেশের কাছে দেশকে হেয় করার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে যখন আমরা অভিযোগ উপস্থাপন করলাম প্রথমে বিএনপি অস্বীকার করেছে। এরপর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বললেন যে তিনি কোনো চিঠিও দেন নি।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকারীরা আশাহত হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
পরে যখন আমরা বিএনপির প্যাডে মির্জা ফখরুলের সই করা চিঠি উপস্থাপন করলাম, সেখানে যে তিনি বাংলাদেশের সাহায্য বন্ধ করার কথা বলেছেন, সেটি যখন আমরা উপস্থাপন করলাম। একই সঙ্গে বিএনপির কার্যালয়ের ঠিকানা দিয়ে লবিস্ট নিয়োগের দলিল যখন আমরা উপস্থাপন করলাম তখন তারা নিশ্চুপ হয়ে গেলেন। তারা চুপসে গেলেন। কারণ তাদের জবাব নেই। তাদের অপকর্ম যখন দেশের মানুষের কাছে উপস্থাপিত হলো তখন তাদের কাছে কোনো জবাব নেই। সে জন্য এখন তারা নানা প্রশ্ন উপস্থাপন করার চেষ্টা করবেন, তাদের অপকর্ম ঢাকার জন্য। নানা কথা বলবে এটা খুবই স্বাভাবিক।
সরকারের লবিস্ট নিয়োগের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের পক্ষ থেকে রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য পিআর ফার্ম নিয়োগ করা হয়ে থাকে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও জানানো হয়েছে, আমরা পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছি।
এটি কেন করা হয়? এগুলো করার জন্যই তো রপ্তানি বেড়েছে। কোভিডের মধ্যেও রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলো তো এমনি এমনি হয়নি। রপ্তানি বৃদ্ধি করতে নানা জায়গায় লবিং করা হচ্ছে দেখেই তো এটা হচ্ছে। এগুলো ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট। এগুলো সরকারি চুক্তি। এখানে প্রশ্ন রাখার কিছু নেই।
আরও পড়ুন: বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা এঁকেছিল জামায়াতে ইসলামী: তথ্যমন্ত্রী
সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরূপ মন্তব্যেরও জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে। সেখানে দু’জন বাদে সবাই সাংবিধানিক পদধারী। যখনই সার্চ কমিটি হবে ভবিষ্যতেও নির্বাচন কমিশনের জন্য তখনও এই সাংবিধানিক পদধারীরা দায়িত্ব পালন করবেন।
তারা সাংবিধানিক পদধারী সরকারের কোন পদধারী নয়। রাষ্ট্রপতিও তাদের সরাতে পারবেন না। সেটির নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। দু’জন সিভিল সোসাইটির সদস্য নেয়া হয়েছে। তারা দু’জনই অত্যন্ত নিরপক্ষে মানুষ হিসেবে এবং সমাজে শ্রদ্ধেয় হিসেবে পরিচিত। এই সার্চ কমিটি নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপি নেতাদের সমালোচনায় তিনি বলেন, সবকিছুতেই যখন না বলার যে বাতিক এটি থেকে বিএনপি বের হতে না পারলে তারা যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে জানি না। নির্বাচন কখনো সরকারে অধীনে অনুষ্ঠিত হয় না। নির্বাচনের সময় সরকার একজন কনস্ট্রেবলও বদলি করতে পারেন না। তখন সবার চাকরি নির্বাচন কমিশনের অধীনে হয়ে যায়। মূল কথা হচ্ছে, বিএনপির তো সরকারের প্রতি কোনো আস্থা নেই।
আরও পড়ুন: ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেয়া হয়নি: তথ্যমন্ত্রী
সবকিছু নেগলেট করার তারা যে পদ্ধতি তারা বেছে নিয়েছে সেটিই তারা অব্যাহত রেখেছে। মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জল ঘোলা করে কোনো কিছু করা যায় কিনা সেটাই তারা করে যাচ্ছেন।