তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি হলেও হাহাকার হবে না। যদি আমনের বেশি ঘাটতি হয়ে যায় তাহলে চাল আমদানি করতে হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এ জন্য সীমিত পরিসরে চাল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। সেখানে হয়ত ৫ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন চাল আনা লাগতে পারে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমনটা দেখি কেমন উৎপাদন হয়। তবে ব্যাপক সংকট হবে না। প্রধানমন্ত্রী খাদ্য মন্ত্রণালয়কে চাল আমদানির একটা নীতিগত অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন। যদি দেখা যায় যে বেশ দাম বেড়েছে সে ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু চাল আমদানি করা হতে পারে। তবে সেটা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ করে চাল ও আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয় থেকে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর দুই লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আউশ চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং সেটা অর্জনও করেছি। তবে বন্যার কারণে আউশের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির কারণ বা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি আমন নিয়ে। কারণ দীর্ঘ সময়ের বন্যার কারণে নিচু এলাকাগুলোতে আমন চাষ করা যায়নি। শেষের দিকে কিছু আমন ধান লাগালেও হঠাৎ আশ্বিন মাসের বন্যায় তা নষ্ট হয়ে গেছে।’
‘আমনের উৎপাদন নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা আছে। তবে আশা করছি সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে উচু জমিগুলোতে আমন ভালো হবে। এ পরিস্থিতিতে যদি কিছু ঘাটতিও হয় আমি মনে করি না বাংলাদেশে কোনো হাহাকার পড়বে,’ বলেন তিনি।
আবদুর রাজ্জাক জানান, দফায় দফায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা এবং কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইতোমধ্যে প্রায় ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ পুনর্বাসন কর্মসূচি হিসেবে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব প্রদান এবং সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলায় কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এসব উদ্যোগের ফলে সব আশঙ্কা পেছনে ফেলে করোনা মহামারির চরম বিরূপ পরিস্থিতি এবং ঘূর্ণিঝড়, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাঝেও বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রেখেছে।