বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন।
একইসাথে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া পানামা ও প্যারাডাইস পেপারে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে তদন্ত করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রীয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাসের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে আব্দুল কাইয়ুম খান নিজেই শুনানি করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। আদালত আগামী ৩০ মার্চ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছে।
রিট আবেদনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, অর্থ সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৫ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সুইস ব্যাংকে থাকা টাকার বিষয়ে দেশি বিদেশি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ওই রিট আবেদন করা হয়।
রুলে অর্থ পাচারের ঘটনাগুলো তদন্তের জন্য কেন একটি আলাদা তদন্ত টিম গঠনের নির্দেশ দেয়া হবে না এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না কিংবা অর্থ ফেরত আনতে প্রয়োজনে নতুন কোনো আইন করার সুপারিশ কেন করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: অর্থপাচারকারী দ্বৈত পাসপোর্টধারীদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট
অর্থপাচার তদারকিতে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তালিকা চায় হাইকোর্ট
পুলিশের অপরাধ তদন্তে ‘স্বাধীন কমিশন’ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
শুনানিকালে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আদালতকে বলেন, আলোচিত পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। এ পর্যন্ত যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও মুসা বিন শমসের। এছাড়া সুইস ব্যাংক থেকে টাকা আনার বিষয়ে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইমিগ্রেশন পুলিশ, বিএফআইইউসহ সংশ্লিস্ট সকলকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া বিএফআইইউকে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তারা সেটা করছে।
শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, কারা পাচারকারী তাদের বিষয়ে তথ্য প্রকাশে আইনগত কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিট(বিএফআইইউ) ওই তালিকা শুধুই তদন্তের কাজে ব্যবহার করতে পারবে।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এই আদালত দ্বৈত নাগরিকের বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। কিন্তু এই তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই সংখ্যা কমবেশী ১৪ হাজার। তবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা পেতে সময় প্রয়োজন।
আদালত বলে, ভারতের আদালতেও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একই বক্তব্য দেয়া হয়। কিন্তু সেখানকার সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে বলেছে আদালত যে কোনো তথ্য চাইতে পারে।
শুনানি শেষে রুল ও আদেশ জারি করে হাইকোর্ট।