স্বাস্থ্য খাতের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেছেন, এখন থেকে বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম চালাতে হলে সরকারি নিয়ম মেনে চলতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, 'আমরা লক্ষ্য করছি যে, কিছু অসাধু ব্যক্তি সরকারি বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়িক স্বার্থে সর্বত্র হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করছে।’
বৃহস্পতিবার(২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এক বিশেষ বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে আগ্রহী ব্রিটিশ সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সামন্ত বলেন, ১ হাজার ২০০ অনিবন্ধিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দক্ষ চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান নেই। অথচ তারা কীভাবে চলছে এবং রোগীরা কীভাবে সেবা পাচ্ছেন তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
তিনি জানান, তারা ইতোমধ্যে দেশের এক হাজার অনিবন্ধিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছেন এবং বাকিগুলো বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০ দফা গাইডলাইন নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্দেশনা উপেক্ষা করলে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ভয়ভীতি মুক্ত ও নিরপেক্ষ থেকে মানুষের সেবায় কাজ করে যাব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এখানে নির্দেশিকাগুলো হলো-
১. প্রাইভেট ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্সের কপি প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকের সামনে দৃশ্যমান স্থানে স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে।
২. সকল বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের সকল তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।
৩. যেসব প্রতিষ্ঠান ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল নামে আছে কিন্তু তাদের কেবল ডায়াগনস্টিক বা হাসপাতালের লাইসেন্স আছে তারা লাইসেন্স ছাড়া নামে উল্লেখিত সেবা কোনোভাবেই প্রদান করতে পারবে না।
৪. ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স গ্রহণ করা হয়েছে সে ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা ব্যতীত অন্য কোনো পরীক্ষা করা যাবে না এবং ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্যাথলজি বা মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিতে হবে।
৫. বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের ধরন ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সব শর্ত বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সব চিকিৎসককে অবশ্যই পেশাদার ডিগ্রির সনদের কপি, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি সংরক্ষণ করতে হবে।
৭. হাসপাতাল বা ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অপারেশন বা অস্ত্রোপচার বা পদ্ধতির জন্য নিবন্ধিত চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।
৮. লাইসেন্সপ্রাপ্ত বা নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যতীত কোন অবস্থাতেই চেম্বার বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এনেসথেসিয়া প্রদান করা যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অ্যানেসথেটিস্ট ছাড়া কোনো অপারেশন বা সার্জারি বা ইন্টারভেনশনাল অপারেশন করা যাবে না।
৯. সকল বেসরকারি নিবন্ধিত বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল বা ক্লিনিককে অবশ্যই লেবার রুম প্রটোকল মেনে চলতে হবে।
১০. নিবন্ধিত বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল বা ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটার অবশ্যই অপারেশন থিয়েটার শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: কোটি টাকার অপারেশন দেশে বিনামূল্যে হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী