চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতে ১১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন।
রবিবার নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে কাজ করা ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, এসব দুর্ঘটনায় ১৭২টি যানবাহন সম্পৃক্ত ছিল। বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ৩৪.২১ শতাংশ রাতে ঘটেছে। এছাড়া ২০.১৭ শতাংশ ভোরে, ১৮.৪২ শতাংশ সকালে, ৯.৬৪ শতাংশ দুপুরে, ১৪.০৩ শতাংশ বিকালে এবং ৩.৫০ শতাংশ সন্ধ্যায় ঘটেছে।
আরও পড়ুন: নটর ডেম কলেজছাত্রের মৃত্যু: ডিএসসিসি’র পরিচ্ছন্নতাকর্মী হারুন রিমান্ডে
দুর্ঘটনার কারণ
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন তাদের প্রতিবেদনে নগরীতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণ উল্লেখ করেছে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিকল্পিত নগরায়ণ ও অপ্রতুল সড়ক, একই সড়কে অযান্ত্রিক-যান্ত্রিক, স্বল্প ও দ্রুতগতির যানবাহনের চলাচল এবং দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, যথাস্থানে ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস না থাকা, রাজধানীর যাত্রীবাহী বাস টার্গেটভিত্তিক চালানোর ফলে চালক-শ্রমিকরা পথে পথে যাত্রী উঠানোর জন্য বেপরোয়া প্রতিযোগিতায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ নির্দিষ্ট স্থানে বাস-বে ও বাস স্টপেজ না থাকা, ঢাকা শহরের পাশ দিয়ে বাইপাস না থাকার ফলে রাত ১০টা থেকে সকাল পর্যন্ত পণ্যবাহী যানবাহন রাজধানীর ভেতরে বেপরোয়াভাবে চলাচল, রাজধানীতে অধিক পরিমাণে মোটরসাইকেলের চলাচল, দীর্ঘসময় যানজটে আটকে থাকার পর ট্রাফিক সিগনাল ছাড়লে সবধরনের যানবাহন একযোগে বেপরোয়া গতিতে ছোটা, অসহনীয় যানজটের কারণে সড়ক ব্যবহারকারীদের আচরণে অসহিষ্ণুতা ও অস্থিরতা তৈরি হওয়া, গণপরিবহন মানসম্মত ও সহজলভ্য না হওয়ার কারণে রিকশার ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি এবং ফ্লাইওভারগুলোতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা।
পড়ুন: নটরডেম কলেজ ছাত্রের মৃত্যুতে বিক্ষোভ অব্যাহত
পরামর্শ
রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে মানুষের ঢাকামুখী হওয়া কমানোর সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। জেলা ও বিভাগী পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে কর্মজীবী মানুষের ঢাকামুখী স্রোত থামানোর পরামর্শ দিয়েছে আরএসএফ।। এছাড়া সামর্থ্য বিবেচনা করে রাজধানীতে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য পৃথক গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করে ব্যক্তিগত গাড়ি নিরুৎসাহিত করতে হবে, প্রধান সড়কগুলোতে গণপরিবহনের জন্য আলাদা লেন তৈরি করতে হবে। এই লেনে কোনো প্রকার ব্যক্তিগত যানবাহন চলতে পারবে না, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে, গণপরিবহনে খাতের চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।