ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জানিয়েছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজ পালনে সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রীর কোটা সৌদি আরবে ফেরত যাবে।
তিনি বলেন, কোটা ফেরত দেওয়া হলেও তা আগামী হজে প্রভাব ফেলবে না।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে ‘ই-হজ মোবাইল অ্যাপ’ এবং ‘হজ ও ওমরাহ সহয়িকা প্রকাশনা’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই হজ প্যাকেজ ঘোষণা: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন।
এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি হজের নিবন্ধন শুরু হয়। এরপর আট দফা বাড়ানো হয় নিবন্ধনের সময়। এর মধ্যেও কোটা পূরণ হয়নি।
শেষে নবম দফায় মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) নিবন্ধনের বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়। এরপরও কোটা পূরণ হয়নি।
মোট এক লাখ ২০ হাজার ৪৯১ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। কোটা পূরণে এখনো ছয় হাজার ৭০৭ জন বাকি। তবে হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের বাদ দিয়ে সাড়ে তিন হাজারের কোটা খালি থাকবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
কোটা পূরণ না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হজের নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না। কোটা যতটুকু খালি আছে ততটুকু সৌদি আরবে ফেরত যাবে। এটা আর পূরণ হবে না।
তিনি বলেন, এবার সাড়ে তিন হাজারের মতো হজযাত্রীর কোটা খালি থাকছে, সেটি সৌদি আরবকে ফেরত দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: হজ প্যাকেজের খরচ কমাবে সরকার: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, আমরা গত বছর দুই হাজার ৪১৫ জনের কোটা সৌদি সরকাররের কাছে চেয়ে নিয়েছিলাম। দুই-তিন হাজার এটা কোনো বিষয় নয়। হজের পরে আপনারা প্রমাণ পাবেন সারাবিশ্বের অবস্থা কী হয়, আর আমাদের কী অবস্থা।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উন্নত হজ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। হজের প্রাক-নিবন্ধন, নিবন্ধন, হজ যাত্রীদের টিকা ও চিকিৎসা সেবা প্রদান, আবাসন ব্যবস্থার তথ্যাদি, লাগেজ ব্যবস্থাপনা, হারানো হজযাত্রী খুঁজে পাওয়াসহ যাবতীয় সেবা কার্যক্রমে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করছি।
এছাড়া হজ এজেন্সিগুলো প্রযুক্তিগত সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হজযাত্রী এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত অংশীজনদের জন্য হজ পালনসহ ধর্মীয় অন্যান্য বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে ই-হজ মোবাইল অ্যাপ এবং হজ ও ওমরাহ সহায়িকা প্রকাশ করা হয়েছে। এটি স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি চমৎকার উদ্যোগ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ই-হজ মোবাইল অ্যাপটি আজকে পরীক্ষামূলকভাবে উদ্বোধন করা হলো। প্রাথমিকভাবে প্রাক-নিবন্ধন ও প্রাক নিবন্ধন রিফান্ড আবেদন এই সিস্টেমের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পাশাপাশি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন তথ্য এখানে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। ফলে হজযাত্রীরা এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসে ভাউচার তৈরি করতে পারবেন।
আগামীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা নিয়ে অনলাইনে প্রাক নিবন্ধন ও নিবন্ধনের আর্থিক লেনদেন নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বর্তমানে ই-হজ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সেবাও পর্যায়ক্রমে মোবাইল অ্যাপটিতে সংযুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: মহানবীর শিক্ষা ও আদর্শ মুসলিম উম্মাহকে উদার ও মানবিক হতে শিক্ষা দেয়: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী