প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবে আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো সমাধান করা উচিত, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং ভারত ঠিক সেটাই করছে।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশকে ‘পরীক্ষিত বন্ধু’ হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারত প্রয়োজনের সময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, প্রথমে ১৯৭১ সালে এবং তারপরে পরবর্তী সময়েও।
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান আমরা সবসময় স্মরণ করি। ১৯৭৫ সালে যখন আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছিলাম, তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন... আমরা প্রতিবেশী, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং আমি সবসময় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্বকে অগ্রাধিকার দেই।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ঢাকা-দিল্লির বহুমাত্রিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রত্যাশা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় পূর্ব ইউরোপে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগের প্রশংসা করেন হাসিনা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এএনআইকে দেয়া সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’ এর অধীনে প্রতিবেশী দেশগুলোতে কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের মোদি সরকারের প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর জোর দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে (মোদি) ধন্যবাদ জানাতে চাই… রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে এই যুদ্ধের সময় আমাদের অনেক ছাত্র আটকা পড়েছিল এবং তারা আশ্রয়ের জন্য পোল্যান্ডে গিয়েছিল। যখন তারা ভারতীয় ছাত্রদের সরিয়ে নিয়েছিল, তখন তারা আমাদের ছাত্রদেরও দেশে ফিরিয়ে আনে... আপনি স্পষ্টভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন। এই উদ্যোগের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
আরও পড়ুন: তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি ভারতের ওপর নির্ভর করছে: প্রধানমন্ত্রী
হাসিনা তার দেশের টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কেও বিস্তারিত জানান। বাংলাদেশ তার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাধারণত আমাদের দেশের লোকেরা, বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ে, এমনকি কিছু শহরেও, আমি অনেক লোককে ভ্যাকসিন নিতে খুব অনিচ্ছুক দেখেছি। তারা নিতে চায় না... আপনি জানেন... সুচের ছিদ্র, তাই... আমাদের বুঝাতে দিতে হবে। আমরা তাদের বলেছিলাম যে এটি কিছুই নয়, এটি আপনার জীবন বাঁচাবে… এই ভ্যাকসিন মৈত্রী... খুব ভালো উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তাদের নাগরিকদের উন্নতির জন্য হওয়া উচিত।
হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ এর সময়কালেও ভারতীয় নেতৃত্ব তাদের ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিল। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উভয়েই স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় বাংলাদেশ সফর করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং আপনার রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে তারা দুজনই বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর: দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে বেশ কিছু চুক্তির সম্ভাবনা