প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে তার সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় দেশগুলো এবং এর বাইরেও অন্যান্য দেশে কীভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হয় তা জানতে অনুরূপ আইনগুলো খতিয়ে দেখছে এবং পরীক্ষা করছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেছেন যে বাংলাদেশের আইনটি অনেক সহজ।
ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কেউ যদি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে বা জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে বা জঙ্গিবাদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং অনলাইনে বোমা তৈরি করে তাহলে সে অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত কেউ যদি মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল চুরি করার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে কি পুরস্কৃত করা উচিত? কোনো সভ্য দেশে এটা করলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়?
তিনি বলেন, ‘হাতেনাতে ধরা পড়া সত্ত্বেও, সেই সাংবাদিককে হিনো হিসেবে চিহ্নিত করে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘যখন সমগ্র বিশ্ব কোভিড -১৯ এর কারণে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল ছিল এবং আমরা ভ্যাকসিন কেনা নিয়ে আলোচনা করছিলাম; তখন একজন কর্মকর্তা এই ফাইল চোরকে ধরে ফেলেন…। সেই ব্যক্তি তখন হিরো হয়ে ওঠে এবং পুরস্কৃত হয়। যদি অন্য কোনো দেশে, উন্নত বা সভ্য দেশে এমনটি ঘটে থাকে তবে তারা কী করত?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন শুধু বাংলাদেশে নেই; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যেরও এমন আইন রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে পদ্মা সেতুর চিত্রকর্ম উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগের চেয়ে বেশি ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১২-১৩ কোটির সিম কার্ড রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সমস্যা আছে… অনেক… অনলাইনে শেখানো হচ্ছে কীভাবে বোমা তৈরি করতে হয়, কীভাবে মানুষ মারতে হয়… এগুলো বন্ধ করা দরকার। আমি মনে করি আন্তর্জাতিকভাবে এ বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। যারা অনলাইনে এই ধরনের অপরাধে শিশু-কিশোরদের জড়িত করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। ‘আমাদের দেশে আগে একটা আইন ছিল, যখন সামরিক স্বৈরশাসক ক্ষমতায় ছিল, যার অধীনে যেকোনো সাংবাদিককে বিনা সমনে গ্রেপ্তার করা যেত। আমি (আওয়ামী লীগ সরকার) দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা বন্ধ করে দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, ‘সুতরাং, এটি সাংবাদিকদের হয়রানির ঘটনা নয়। যদি কেউ অসামাজিক কার্যকলাপ বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে সাধারণত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
আরও পড়ুন: বহিরাগত চাপে পদ্মা সেতু থেকে সরে গেছে বিশ্বব্যাংক: ভবিষ্যতের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ’ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র