ঢাবি উপাচার্য ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা (ঢাবি কর্তৃপক্ষ) একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কাজ করছি এবং বিভিন্ন দিক বিবেচনা করছি। অনলাইন ক্লাসের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং প্রযুক্তিগত সুবিধা নিশ্চিত করার পর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আমাদের ডিনরা তাদের নিজ অনুষদের বিভাগগুলোর সাথে সমন্বয় করবে… এটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন যে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য গত ২৪ মার্চ ইউজিসি শিক্ষকদের অনলাইনে ক্লাস নেয়ার আহ্বান জানানোর পর বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে অনলাইন ক্লাস শুরু করেছে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাস নেয়া শুরু করলেও, ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানান অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর পরিস্থিতি একই রকম নয়। কারও কারও কাছে খুব সীমিত ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে, যা অনলাইন ক্লাস করার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আগ্রহ এবং সুবিধা-অসুবিধার কথা আমাদের চিন্তা করতে হবে’।
ড. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি অস্বাভাবিকভাবে দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীরা সেশন জ্যামে পড়তে পারে।
‘অবশ্যই সেশন জটের আশঙ্কা বেড়েছে। কেবল আমাদের দেশে নয়, প্রায় সমগ্র বিশ্বেই শিক্ষাব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে’, যোগ করেন তিনি।
‘প্রাণঘাতী এ মহামারির ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়েই আমরা একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করছি,’ বলেন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না যা তাদের জীবনকে বিপদে ফেলতে পারে। করোনা মহামারি একটি বৈশ্বিক সংকট এবং অন্য যেকোনো কিছুর তুলনায় মানুষের জীবন মূল্যবান।’
তিনি আরও বলেন, অনলাইন ক্লাসের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে এবং সব ডিন তাদের নিজ নিজ অনুষদের অধীনে থাকা বিভাগগুলোর সাথে আলোচনা করছেন।
অধ্যাপক সাদেকা হালিম ইউএনবিকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নয় এবং অনেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করেন যেখানে ইন্টারনেটের ব্যবহার সীমিত। তাদের সমস্যার কথা বিবেচনা না করে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নেয়া অন্যায্য একটি পদক্ষেপ হবে। আমরা বিকল্প খুঁজতে কাজ করছি।’
ঢাবি উপাচার্য পুনরাবৃত্তি করে বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা সংকট সবকিছুকে এক অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে ফেলেছে। তবে যা প্রয়োজন তা করার জন্য কাজ করছে একাডেমিক কাউন্সিল।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী এমন কোনো খাত নেই যেটি এ সংকটে প্রভাবিত নয়...অতীতে আমরা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেশন জট দেখেছি কিন্তু সেসব দিন অনেক আগেই অতিবাহিত হয়েছে। আমরা এ প্রথম এ ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছি।’
‘সেশন জট এড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের সময় যাতে নষ্ট না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সম্ভাব্য পদক্ষেপের পরিকল্পনা তৈরির জন্য কাজ করছি,’ যোগ করেন তিনি।
সারা দেশে একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে অনলাইন ক্লাসে স্থানান্তরিত হয়েছে।
এর আগে, কোভিড-১৯ থেকে সৃষ্ট পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।