কুমিল্লা অংশে চান্দিনার প্রায় দুই কিলোমিটার, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম অংশে প্রায় এক কিলোমিটার, দাউদকান্দি, চৌদ্দগ্রামের গুনবতী রোড়, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড় এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে সারি সারি ময়লার স্তুপ।
পথচারীদের ভোগান্তি সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত সড়কের পাশে থেকে এসব ময়লার স্তুপ সরানোর কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: অধ্যক্ষ নেই কুমিল্লার ৭ সরকারি কলেজে
আবর্জনার স্তুপ থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি দুর্গন্ধে মহাসড়কে চলাচলকারী হাজারো যানবাহনের যাত্রী, পথচারীরা সমস্যায় পড়ছেন। মহাসড়কের এসব স্থান দিয়ে চলার সময় নাকে রুমাল চেপে চলতে হয় যাত্রী ও পথচারীদের।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে এমন বেশ কয়েকটি ময়লার ভাগাড় তৈরি করে প্রতিনিয়তই হাট-বাজারের ময়লা-আবর্জনাসহ নানা ধরনের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার হোটেলসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনায় একদিকে যেমন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, তেমনি রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
চান্দিনা উপজেলা পরিষদের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে যাওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এ মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার পালকি সিনেমা হলের কাছ থেকে সাহাপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে স্তুপের পর স্তুপ ময়লার ভাগাড়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ২ শতাধিক অনুমোদনহীন রেলক্রসিং যেন ‘মরণ ফাঁদ’
চান্দিনা বাজার বা উপজেলা সদরের সকল ময়লা আবর্জনা ফেলা হয় এই মহাসড়কের পাশে। ২২ বছর আগে চান্দিনা পৌরসভা গঠন করা হলেও ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান আজও নির্মিত হয়নি।
একই অবস্থা চোখে পড়ে জেলার লাকসাম উপজেলার কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে। লাকসাম বাজারের সকল ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় ওই স্থানটিতে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও এখানেও নির্মিত হয়নি ময়লা-আর্বজনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান। ফলে প্রতিদিনের ময়লা-আবর্জনার স্থান হয় সড়কের দুই পাশে। ময়লা আবর্জনার ওই স্তুপ বড় হয়ে গেলেও সেগুলো সরিয়ে না নিয়ে দেয়া হয় আগুন। সেই আগুনে ময়লার কাগজ-পলিথিনের পাশাপাশি পুড়ে যাচ্ছে মহাসড়কের পাশে থাকা ছোট-বড় গাছও।
আরও পড়ুন: বৃহত্তর কুমিল্লার প্রথম শহীদ মিনার ভিক্টোরিয়া কলেজে
জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্ব রোড়ের ইউর্টানের দক্ষিণ পাশে, উপজেলা রোড থেকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সুয়াগাজীসহ দুই পাশে রয়েছে একাধিক ময়লার স্তুপ।
এছাড়াও দেশের প্রধান ব্যস্ততম ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে বৃহত্তম সবজির বাজার নিমসার বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলার সঠিক স্থান না থাকায়, সড়কের পাশে ময়লা ফেলায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আরও পড়ুন: অতিথি পাখিতে মুখরিত কুমিল্লার পুকুর আর দিঘিগুলো
ইমন হোসেন নামে পদুয়ার বাজার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা বলেন, ‘মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা কঠিন। আমি এ সড়ক দিয়ে প্রায় চলাচল করি। ময়লার স্তুপের পাশে আসলে নাক চেপে পার হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।’ এ জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করলেন তিনি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহাদ উল্লাহ বলেন, ‘মহাসড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলা অপরাধ। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এসব বিষয়ে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। শিগগিরই এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন: করোনার সনদ পেতে বৃহত্তর কুমিল্লার ৬ জেলার মানুষের ভোগান্তি
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা আঞ্চলিক শাখার সভাপতি ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অবৈধভাবে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে এ অঞ্চলের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে। ময়লা ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নেয়া। বিষয়টি নিয়ে আমরা সব সময় লেখালেখি করে সামাজিক আলোন্দনের চেষ্টা করছি।’