নতুন বছরের শুরুতেই গত ১ জানুয়ারি থেকে হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধিতে দুর্ভোগে পড়েছেন ক্রেতারা। হোটেলে ব্যবহৃত বড় বোতলের দাম ৫৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। খুলনা অঞ্চলে পাইপলাইনে গ্যাস না থাকায় ছোট-বড় সব ধরনের কারখানা এবং রান্নার কাজে এলপি গ্যাস ব্যবহৃত হয়। এজন্য গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাব পড়েছে রান্নাঘর থেকে সর্বত্র।
সরবরাহকারীরা বলছেন, শীতকালে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের চাহিদা বেশি থাকায় অধিক মূল্যে কিনতে হচ্ছে; আর একারণেই হঠাৎ করে এ মূল্য বৃদ্ধি।
একাধিক সরবরাহকারী, পরিবেশক ও ক্রেতা সূত্রে জানা গেছে, গেল ডিসেম্বর পর্যন্ত বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সাড়ে ১২ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য ছিল ৯৫০ টাকা। ইংরেজি নববর্ষ থেকে এটি বিক্রি করছে ১১০০ টাকায়। হোটেলে বা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত ৩৫ কেজির গ্যাস দুই হাজার ৬০০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায় এবং তিন হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের ৪৫ কেজি ওজনের গ্যাস এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ টাকায়।
হঠাৎ করেই বোতলজাত গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে হোচট খাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্রমবর্ধমান ব্যয় বাজেটে বিপাকে পড়ছে নির্ধারিত আয়ের মধ্যবিত্ত পরিবার।
বিক্রেতারা বলছেন, শীত প্রধান দেশগুলোতে কাঁচামালের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশের এলপি গ্যাসের মার্কেটেও এর প্রভাব পড়েছে। প্রাইভেট সকল এলপি গ্যাস কোম্পানির সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্যাসের এ মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
খুলনা জেলা এলপি গ্যাস ডিলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শায়ের আহম্মেদ বিটু বলেন, ‘শীতকালে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের চাহিদার বেশির কারণে অধিক মূল্যে গ্যাস কিনতে হচ্ছে; সে কারণে কোম্পানিগুলোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী মার্চ-এপ্রিলে গ্যামের দাম আবার কমে যাবে।’
গ্যাসের দাম শুধু খুলনাতে নয় সারাদেশসহ সমগ্র দুনিয়াতে বেড়েছে। গ্যাসের দাম বাড়লে বিক্রি হয় কম, যা ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে গেল নভেম্বরের মাঝামাঝিতে বোতল প্রতি একশ’ টাকা, তার আগে গত ৭ মার্চ বৃদ্ধি পেয়েছিল সাত শতাংশ। ২০১৮ সালের ৬ জুলাইয়ে প্রথম দফা, ১ আগস্ট দ্বিতীয় দফা, ১ সেপ্টেম্বের তৃতীয় দফা এবং ওই বছরের ১ অক্টোবর চতুর্থ দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল।
ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলে পাইপ লাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ না থাকায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা বোতলজাত এলপি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। বিপুল এ চাহিদার কথা মাথায় রেখে এ অঞ্চলের একাধিক প্রাইভেট কোম্পানি গড়ে উঠেছে। প্রতিযোগিতা থাকায় এলপি গ্যাসের দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু প্রতিনিয়ত দাম বাড়ায় সাধারণ গ্রাহকের সাথে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরাও।