সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর ২৭৫ হেক্টরে আবাস সম্প্রসারণ বেশি হয়েছে। এছাড়া বোরো চাষাবাদকালীন সময়ে ধানক্ষেতে কোনো ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণ হয়নি। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে কিছুটা বৃষ্টিপাত কৃষকদের সেচ সাশ্রয় ও বিকল্প সার হিসেবে কাজ করেছে। উচ্চ ফলনশীল জাত থেকে হেক্টর প্রতি ৫-৬ মেট্রিক টন এবং সুপার হাইব্রিড থেকে ১০-১২ মেট্রিন টন ধানের ফলন পাওয়া গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে, ঝালকাঠি জেলায় ৯,৫৭৫ হেক্টরে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৯,৮৫০ হেক্টরে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের মধ্যে সুপার হাইব্রিড এস এল-৮ জাত এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে ব্রি-২৮-২৯, ব্রি-৪৭ বিনা-১০ সিংহ ভাগ চাষ হয়েছে।
এর মধ্যে ৯,৫৫০ হেক্টরে উচ্চ ফলনশীল এবং ২৯০ হেক্টরে হাইব্রিড ও ১০ হেক্টরে স্থানীয় জাতের আবাদ হয়েছে। তবে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও ধানের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
কৃষকরা বলেন, ‘বর্তমানে ১ মণ ধানের দাম ৪০০ টাকা, অথচ এই ১ মণ ধান উৎপাদন করতে কৃষকদের খরচ হয়েছে ৪৫০ টাকা।
সদর উপজেলার কৃষক দুলাল হাওয়ালদার বলেন, ‘আমি কম দাম দেখে আমার ধান বিক্রি করিনি। দাম বেড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করবো।’
প্রায় ৪০ শতাংশ ধান কাটার আগেই কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধানের দাম মন প্রতি ৭০০ - ৮০০ টাকা না হলে সকল পরিশ্রমই বৃথা যাবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষকরা। তাদের দাবি, প্রতি মণ ধানের দামে ৭০০-৮০০ টাকায় দাম বাড়াতে হবে।
যদিও সরকারি ২৮ টাকা কেজি দরে ধান ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে, তবে খাদ্য বিভাগ এখন পর্যন্ত ধান ক্রয় শুরু করেনি।
এদিকে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ফল কাটার পরবর্তী মাঠ দিবস করতে গিয়ে ধানের দাম না থাকায় কৃষকদের রোষানলে পড়েছেনে। কৃষকরা তাদের জানিয়েছে, ধানের দাম না বাড়লে তারা কোনো ধরনের ধানের আবাদ করবে না।
নলচটি উপজেলার প্রমহর গ্রামের বাম্পার ফলন উৎপাদনকারী কৃষক ইউনুচ মাঝি বলেন, তিনি ক্ষতির হিসেব করছেন। লাভ না হলে তার পক্ষে বোরো ধানের চাষ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফজলুল হক জানান, কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পেতে নিশ্চিত করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত এর দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়নি।