আবহমান কাল থেকে বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশি। তাই শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া অঞ্চলের গাছিরা খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তবে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় গাছ কাটা, রস জ্বালানো ও গুড়-পাটালি তৈরির উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার অন্য বছরের তুলনায় গুড়-পাটালির দাম বেশি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা চাচা করার জন্য গাছি দা ও দড়ি তৈরিসহ ভাড় (মাটির ঠিলে) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
খেজুর গাছ তোলার গাছি নিছার শেখ, আফসার সরদার, রফিকুল ইসলাম ও আজিজুর রহমানসহ একাধিক গাছিরা বলেন, শীত চলে আসছে। এখন খেজুর গাছ তোলার সময়। খেজুর রসের গুড়-পাটালি তৈরি করে ডুমরিয়া বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এতে আমরা অনেক লাভবান হয়ে থাকি। কিন্তু ইটভাটায় খেজুর গাছ মেরে জ্বালানি কাজে ব্যবহার করার কারণে এ ঐতিহ্য বিলীন হতে চলেছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ না নিলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মধুমতি নদীতে আবার ভাঙন শুরু
খুলনা অঞ্চলে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের বন বিভাগের উদ্যোগে গত কয়েক বছর আগে খেজুর গাছ রোপণের কাজ শুরু করেছে। উপজেলার জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলে রোপিত হয়েছে খেজুর গাছের হাজার হাজার আটি। দেশি জাতের সাথে পরীক্ষামূলকভাবে আরব দেশিয় খেজুরের চারাও রোপণ করা হয়েছে বলে বন বিভাগ জানিয়েছে।
তবে ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার সরকারিভাবে নিষিদ্ধ না করলে গাছ রোপণের কোনো উদ্যোগই কাজে আসবে না বলে এ পেশায় জড়িত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘খেজুর গাছ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারে সরকারিভাবে বন্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃকক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে। এছাড়া গুড়ের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার নানা উদ্যোগ নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: সমুদ্রতীরে ডলফিনের খেলা, বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে পর্যটকদের