গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মহাসড়কের পাশে বিশাল গর্ত হওয়ায় ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের পরিষদের সামনে মহাসড়কের পশ্চিমে বিশাল আকারের গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্তের পাশে মহাসড়ক ঘেঁষে কিছু বালুর স্তুপ ও বালুভর্তি বস্তা ফেলে রাখা হয়েছে। তবে গভীর গর্তের ভেতর রাস্তার পাশে থাকা দুটি গাছ পড়ে আছে। গর্তটির পাশ দিয়ে ঢাকাগামী দূরপাল্লার পরিবহনসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দৌলতদিয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছে। অনেক সময় একটির পাশ দিয়ে আরেকটি পরিবহন যাতায়াতকালে সেখানে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি হয়। যেকোনো মুহূর্তে অসাবধানতায় গর্তে চাকা পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মহাসড়কের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে গোয়ালন্দের মোগবুলের দোকান পর্যন্ত ছোট-বড় অন্তত আরও ৭-৮টি স্থান এমন ধসে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও স্কুল শিক্ষক রমজান আলী বলেন, ‘প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মহাসড়কের পাশ ধসে পড়তে থাকে। প্রথমে সামান্য ধস ছিল। ধীরে ধীরে ওই স্থান দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় এখন অনেক বড় আকার ধারণ করেছে। শিগগিরই গর্ত ভরাট করাসহ মহাসড়কের পাশ সংস্কার করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’
ঢাকাগামী সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মো. মনির হোসেন বলেন, ‘এর আগেও ওই স্থানে মহাসড়কের ওপর ছোট-বড় অনেক গর্ত তৈরি হয়েছে। কিন্তু কখনও মহাসড়ক ধসে পড়েনি। কয়েক মাস আগে মহাসড়ক সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু এখন কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে মহাসড়কের পাশ ধসে বিশাল আকারের গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। যেকোনো সময় গর্তে গাড়ি পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রাতে পরিস্থিতি ভয়ংকর থাকে।’
ঢাকাগামী পণ্যবাহী গাড়ির চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন লকডাউনের কারণে মহাসড়কের কোথায় কী অবস্থা হয়েছে তা অনেকটা অজানা রয়ে গেছে। গত সপ্তাহে মধ্যরাতের দিকে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে ঘাটের দিকে যাওয়ার সময় সড়কের পাশেই দেখি বিশাল গর্ত। অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যাই।’
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা মুঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘গত শনিবার দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে জরুরি কাজে অফিসে যাচ্ছিলাম। এ সময় একটি পরিবহনকে অতিক্রম করে যাওয়ার সময় গর্তের কাছে আমার মোটরসাইকেলের চাকা পড়ে যায়। অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাই।’
জরুরি ভিত্তিতে এসব গর্ত ভরাটের দাবি জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত কয়েকটি স্থান ধসে গেছে। বিশেষ করে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে প্রায় ২০-২৫ ফুট এলাকা জুড়ে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সরেজমিনে এসব স্থান চিহ্নিত করে মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গর্ত ভরাট ও সড়ক সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে ১২ লক্ষাধিক টাকার দরপত্র প্রদান করে জরুরিভাবে বিভাগীয় মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।’