রাস্তার বেহাল দশার কারণে শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি যাদুঘরসহ বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান পরিদর্শন করতে আসা পর্যটকের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পর্যটক ও স্থানীয়রা যানবাহনে এ রাস্তায় চলাচল করায় তাদের বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। পাশাপাশি রাস্তাটি শহরের একমাত্র প্রবেশদার হওয়ার কারণে বিখ্যাত ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক দর্শর্নীয় স্থানগুলো হুমকির মুখে রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে দিন দিন পর্যটক হ্রাস পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এবছর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শালবন বিহার ও ময়নামতি যাদুঘর থেকে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু সড়কটি বেহাল দশার কারণে ৫০ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হারিয়েছে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কে অসংখ্য মাঝারি ও ছোট গর্ত রয়েছে এবং রাস্তাটির ৩০টি অংশে বিশাল বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন সড়কের বড় বড় গর্তগুলো অতিক্রম করতে গিয়ে গর্তে আটকে যায়। কখনও কখনও উল্টে পড়ছে। তখন গন্তব্য পৌঁছাতে যাত্রীদের গর্তে আটকে থাকা যানটি পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে বা টেনে উঠাতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কুমিল্লার শালবন বৌদ্ধবিহার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, নব শালবন বিহার, ময়নামতি যাদুঘর, ইটাখোলা মুড়া, রূপবান মুড়া, লতিকোট মুড়া, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, লালমাই পাহাড়, শালবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেসরকারি বিনোদন কেন্দ্র ডাইনোসর পার্কসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পর্যটক ও বিনোদন প্রেমীরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মিতালী ও মরিয়ম বলেন, প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে সব সময় দুর্ঘটনার ভয়ে থাকেন তারা। তাই অবিলম্বে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান।
পরিবার নিয়ে শালবন ও যাদুঘরে ঘুরতে আসা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, পরিবার নিয়ে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন কুমিল্লার শালবন বৌদ্ধবিহার ও ময়নামতি যাদুঘরে যাবো। কিন্তু সড়কটির যে বেহাল দশা যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সিটি করপোশনের ২৪নং ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী তারিকুল ইসলাম রনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির বেহাল দশা হলেও স্থানীয় প্রশাসন চলাচলের অযোগ্য সড়কটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম বড়ুয়া বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই মেরামতের কাজ শুরু হবে।