জুম চাষের নামে জুমিয়াদের এ ধ্বংসলীলা চলছে বছরের পর বছর। ফলে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাচ্ছে, বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণী, পাখি ও কীট-পতঙ্গ। একই সাথে পরিবেশেরও বিপর্যয় ঘটছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, আগুনের লাগামহীন লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ছে পাহাড় থেকে পাহাড়ে। আর ধ্বংস হচ্ছে শত শত একর সংরক্ষিত পাহাড়ি বনাঞ্চল। অনেক সময় আগুনের শিখা থেকে বাদ পড়ছে না বসত ঘরগুলোও। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।
অবাদে বনাঞ্চাল ধংসের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পাহাড়ি ছড়া ও কুয়ায় দেখা দিচ্ছে চরম পানির অভাব, ফলে বাড়ছে পাহাড়ে পানিবাহিত রোগবালাই। তবে পাহাড়ে আগুন দেয়া থেকে স্থানীয়দের দূরে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায়ই কঠোর বার্তা দেয়া হলেও তাতে লাগাম টানা যাচ্ছে না।
গ্রাম প্রধান ও স্থানীয় সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমার দাবি, তারা নিরুপায় হয়েই পাহাড়ে আগুন দেন। তাদের খাদ্যের সংকট রয়েছে, খাদ্যের যোগানে তাদের বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান নেই। আগুন না দিলে, জুম চাষ না হলে না খেয়ে থাকতে হবে।
তার দাবি, সরকার যদি তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেয় তাহলে তারা জুম চাষ ছেড়ে দেবেন। তখনই পাহাড়ে আগুন দেয়া বন্ধ হবে।
বাঘাইছড়ির পরিবেশ সুরক্ষা কমিটির সভাপতি ও কাচালং সরকারি কলেজের জীব বিজ্ঞানের প্রভাষক আবুল ফজল মনে করেন, জুম চাষের নামে অবাদে বনাঞ্চল ধংস করার পরিণাম হবে ভয়াবহ। ‘পানির স্তর শুকিয়ে যাবে, নেমে আসবে চরম বিপর্যয়। তাই বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের জুম চাষ থেকে বিরত রাখতে হবে। তা না হলে পরিবেশ বিপর্যয় মারাত্মক আকার ধারণ করবে।’