প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী জাদুকাটা নদীর রূপ বৈচিত্রের জন্য এর ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। দেশজুড়ে ভ্রমণপিপাসুরা সারাবছর ই ছুটে আসে এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
নদীটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসি পাহাড়ে উৎপত্তি লাভ করে বয়ে এসে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলা দিয়ে বয়ে গেছে। এই তাহিরপুর উপজেলা বর্তমানে বাংলাদেশে নির্মাণ শিল্পের প্রয়োজনীয় বালু ও পাথরের অন্যতম যোগানস্থল।
কিন্তু অপরিকল্পিত এবং অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলনের ফলে নদীটির অস্তিত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ধলেশ্বরী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: বসত-বাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন
স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই ক্ষমতাশালীরা অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের সাহস পাচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, প্রশাসন বা পুলিশ পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায় না। তাই স্থানীয়রাও এই অবৈধ কাজে বাঁধা দিতে তেমন একটা সাহস পায় না।
স্থানীয় এক ব্যক্তি ইউএনবিকে বলেন, বছর-বছর ধরে চলে আসা এই অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন একদিকে যেমন সরকারকে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, অন্যদিকে পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।
গত ২৪ মার্চ স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি এবং র্যাবের সমন্বিত টাস্ক ফোর্স বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালু এবং পাথর জব্দ করে।
স্থানীয়রা জানায়, জব্দকৃত বালু ও পাথরের কিছু অংশ নিলামের মাধ্যমে দুই পক্ষের নিকট ৩৬ লাখ টাকায় বিক্রি করে প্রশাসন। বাকি জব্দকৃত বালু ও পাথর বর্তমানে প্রশাসনে জিম্মায় আছে। স্থানীয়রা বলছেন, খুব দ্রুত অবশিষ্ট মালামাল নিলামে বিক্রি করা না হলে সেগুলো চুরি হয়ে যেতে পারে।
তাহিরপুরের স্থানীয় এক বাসিন্দা তথ্য গোপন রাখার শর্তে ইউএনবিকে বলেন, “বালু ও পাথর উত্তোলনকারী চক্রের প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করা উচিৎ।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, “জব্দকৃত মালামালে একাংশ আমরা ইতিমধ্যেই নিলামেই বিক্রি করেছি এবং বাকিগুলোরও ব্যবস্থা নেয়া হবে।” এসয় হুশিয়ারি জানিয়ে তিনি বলেন, “খুব শিগগিরই পলাতক সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে কৃষি জমি
অবিক্রিত বালু ও পাথর সম্পর্কে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “করোনার লকডাউনের কারণে অবশিষ্ট মালামাল বিক্রিতে আমরা বাঁধাগ্রস্ত হয়েছি। লকডাউন শেষে আমরা নিয়ম অনুযায়ী সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”