সংস্কারের অভাবে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানার কুচিয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
প্রায় ৩৫ বছর আগে নির্মিত সেতুটি দীর্ঘ দিনে সংস্কার না করায় অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে এরই মধ্যে খুঁটিতে ফাঁটল ধরেছে। রেলিং (গার্ডার) ভেঙে পড়েছে আরও আগে। এই অবস্থাতে বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পারাপার করছে। যেকোন মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিগগিরই সেতুটি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের কুচিয়া নদীর দু’তীরের টেংরামারী, উত্তর কাইনমুখী, দক্ষিণ কাইনমুখী ও দিঘাসহ প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার্থে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ সানা সেতুটি নির্মাণ করেন।
আরও পড়ুন: অপরিকল্পিত সেতুর কারণে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে না পুনঃখনন করা ভারানি খাল
দ্বীপ বেষ্টিত সোলাদানার উত্তর কাইনমুখী গ্রামের কিশোর মন্ডল জানান, ইউনিয়নব্যাপী জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় নদী বা খাল। চারদিকে যতদূর চোখ যায় যেন পানি আর পানি। সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থায় সেতুটিই তাদের একমাত্র ভরসা। তবে মূল অবকাঠামো হারিয়ে সেতুটি এখন রীতিমত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে এখনো এলাকাবাসীর অবিরাম সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে যেকোন সময় দুর্ঘটনারও আশঙ্কা করছেন তিনি।
দিঘার এলাকার কল্লোল মন্ডল জানান, আরও ১০ বছর আগের সেতুটির চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এরপরও তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই যাতায়াত করছেন। উপজেলা সদরসহ স্কুল-কলেজে পৌঁছাতে সেতুটিই তাদের একমাত্র ভরসা।
দক্ষিণ কাইনমুখীর বিজন মন্ডল জানান, সেতুটি দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অতিরিক্ত খরচ করে মালামাল বাড়িতে নিতে হয় তাদের।
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ ‘শাপলা পাতা’ মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি, বিলুপ্তির আশঙ্কা
সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক জানান, তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন নতুন সেতুর প্রস্তাবনাসহ কাগজপত্র তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন, সেটি এখনো পাশ হয়নি।
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় চারটি গ্রামসহ উপজেলার হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পাশাপাশি নতুন করে আরও একটি সেতু নির্মাণের দাবি তার। এ নিয়ে আগামী উপজেলা মাসিক উন্নয়ন সভায় উত্থাপনের কথাও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সৌরভ
এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, সাবেক চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক উপজেলা সমন্বয় সভায় একাধিকবার সেতুটির বিষয় উত্থাপন করলেও সেসময় পর্যাপ্ত অর্থাভাবে সেতুটির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা বিবেচনায় অগ্রাধিকারভিত্তিতে শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে।