চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার হোসেনপুর তালুকদার বাড়ির সংলগ্ন কুচয়া খালের ওপর প্রায় ৫০০ পরিবারের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি। বর্তমানে সেটিও ভেঙে যাওয়ায় চলাচলকারী গ্রামবাসীর জীবন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী বহুদিন ধরে একটি সেতু নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করে ক্লান্ত। আর এভাবেই কেটে গেল তিন যুগ, আজও সেতু নির্মাণের কোন ব্যবস্থা হয়নি।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় দীর্ঘ তিন যুগ ধরে এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই খাল পারাপারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সাঁকোটির পশ্চিম পাশে হাফেজিয়া মাদরাসা, এতিমখানা ও মসজিদ থাকায় শিশুদের ঝুঁকি নিয়ে খাল পার হতে হয়। এছাড়া অসুস্থ রোগীকে সাঁকো পার করতে দুর্ভোগের সীমা থাকেন না।
আরও পড়ুন: দেবে গেছে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক, জনদুর্ভোগ চরমে
৭ নং দক্ষিণ কচুয়া ইউনিয়নের (ইউপি) সদস্য মো. শরিফুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘দীর্ঘ বছর যাবৎ এলাকাবাসীর চাঁদায় স্বেচ্ছাশ্রমে এই বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করে লোকজন চলাচল করছেন। বর্তমানে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার কারণে চলাচল প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে। অনেক সময় জরুরি মুহূর্তে পানিতে সাঁতার কেটে পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা।’
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল বলে এতো দিন শিক্ষার্থীদের খুব একটা সুবিধা হয়নি। কিন্তু এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। তাই শিক্ষার্থীরা নিরাপদে চলাচল করার জন্য এলাকাবাসীকে নিয়ে পুনরায় সাঁকোটি নির্মাণের জন্য কাজ করছি।’
ইউপি সদস্য বলেন, ‘আমি কয়েকবার সেতুটি নির্মাণের জন্য কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিডি) অফিসকে অবগত করছি। উনারা সেতু নির্মাণের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেননি।’
আরও পড়ুন: ওয়াই সেতু নির্মাণে রাঙ্গামাটির বিচ্ছিন্ন দুই দ্বীপবাসীর স্বপ্নপূরণ
গ্রামবাসীর দাবি, সরকারি উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ করা হলে তিন হাজারের বেশি মানুষ উপকৃত হবে। তাই সরকারিভাবে জনস্বার্থে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে সরকারের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
হোসেনপুর গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ শফিকুল ইসলাম তালুকদার ও সানা উল্লাহ তালুকদার বলেন, আমাদের ভোগান্তি কেউই দেখতে আসেন না। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের প্রশ্ন, এই ভোগান্তি কবে শেষ হবে?
আরও পড়ুন: কোটিপতি ছেলের বাসায় আশ্রয় হলো না মায়ের
একই গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, এই বাঁশের সাঁকোটি গ্রামের লোকজন কষ্ট করে নির্মাণ করে থাকেন। কিন্তু বর্ষার মৌসুম আসলে তাদের একমাত্র চলাচলের সাঁকোটি পানিতে ভেসে যায়। এরপর চলাচলের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের।
কচুয়া উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, জনস্বার্থে এখানে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।