নাগরিকদের ডিজিটাল দক্ষতা ও ডিজিটাল পরিচয়পত্রের (আইডি) বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরের একটি উচ্চাভিলাষী রূপকল্প প্রকাশ করেছে সরকার।
এই রূপকল্পের ভিত্তিতে চারটি স্তম্ভ রয়েছে সেগুলো হলো- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ। এই চার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করে কমপক্ষে ৯০ শতাংশ নাগরিককে ডিজিটালি শিক্ষিত এবং ৯৫ শতাংশের ডিজিটাল আইডি নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
সংসদে জমা দেওয়া সাম্প্রতিক নথি থেকে জানা যায়, নাগরিকদের দক্ষতা বিকাশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার নিজেদের কৌশল সাজিয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘ডিজিটাল কারিকুলামের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে ন্যূনতম ৯০ শতাংশ নাগরিকের ডিজিটাল সাক্ষরতা নিশ্চিত করা হবে।’
এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাতে সরকার উচ্চ-গতির নির্ভরযোগ্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করার পরিকল্পনা করেছে এবং প্রত্যেক নাগরিকের কমপক্ষে একটি ডিজিটাল ডিভাইস অ্যাকসেস নিশ্চিত করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে ৯৫ শতাংশ নাগরিক তাদের ডিজিটাল আইডির মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করতে পারবে।
ই-পার্টিসিপেশনের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি সেবা তৈরিতে সচেতন নাগরিকদের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে এ নথিতে। এতে আরও বলা হয়, নাগরিক ও সরকার মিলে প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি করবে। এই উদ্যোগের মধ্যে দেশজুড়ে ডিজিটাল ও পক্ষপাতহীন মানসিকতা গড়ে তোলার প্রচারণাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন সদস্যের স্মার্ট কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন সুবিধা নিশ্চিত করা। এছাড়া স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহার ২০৩১ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে শতভাগে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে।
এই পরিকল্পনার একটি মূল অংশ হলো নাগরিক পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে স্মার্ট আইডিগুলোর সর্বজনীন ব্যবহার এবং তা বাড়িয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে শতভাগে নিয়ে যাওয়া।
এছাড়াও একটি সমন্বিত ব্লেন্ডেড এডুকেশন ও স্কিল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে জাতীয় টাস্কফোর্স অন ব্লেন্ডেড এডুকেশনের অধীনে ১২টি উপকমিটির কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার কথাও নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়ার যে বিস্তৃত পরিকল্পনার রূপরেখা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে তরুণদের ওপর গুরুত্বারোপ করে জাতির অগ্রগতির জন্য বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয় পরিকল্পনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। তরুণদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।