আনন্দবাজার ও শ্যামবাজারের মতো বাজারগুলোতে খুচরা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে গত তিন দিনে ভারত থেকে প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে আসলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা এখনও আমদানিকৃত পেঁয়াজ পাননি।
আশিকুর রহমান নামে আনন্দবাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, সরবরাহের ঘাটতি থাকায় রাজধানীর বাজারগুলোতে এখনও পেঁয়াজের দাম হ্রাস পায়নি।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আজ আমি পাইকারি বাজার থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় কিনেছি। পরিবহন খরচও আছে। এ জন্য আমি গ্রাহকদের কাছে ১০০ টাকারও বেশি দামে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছি। ভারতীয় পেঁয়াজ আমরা এখনও পাইনি।’
বাংলাদেশ কেবলমাত্র পেঁয়াজ নয়, বেশির ভাগ পণ্যের জন্য ভারতের ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে আশিকুর বলেন, ‘ভারত সরকার কোনো পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে, বাংলাদেশের বাজারগুলোতে এর তীব্র প্রভাব পড়ে। এছাড়া ঘাটতি দেখা দিলে অল্প সময়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য অনেক ব্যবসায়ী গোপনে পেঁয়াজ মজুত করে রাখেন।’
শ্যামবাজারের পাইকার মানিক সাহা বলেন, ‘বাংলাদেশে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে পাইকারি বাজারে ভারতীয় কোনো পেঁয়াজ নেই। বিপুল চাহিদা থাকায় উচ্চ মূল্যে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রবেশ করা ৯২৫ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ এখনও রাজধানীর বাজারে পৌঁছায়নি।’
আশঙ্কা প্রকাশ করে এ ব্যবসায়ী বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে না নিলে আগামী দিনে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে। পেঁয়াজ একটি মৌসুমি ফসল এবং অন্য মৌসুমে ঘাটতির সময় প্রায়শই এর দাম বৃদ্ধি পায়।
‘তবে পাকিস্তান, তুরস্ক এবং মিয়ানমার থেকে আমদানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় ৩০ সেপ্টেম্বরের পর পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল হতে পারে,’ বলেন মানিক সাহা।
জানা যায়, ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর দিয়ে সোমবার চারটি ট্রাকে ৯৬ মেট্রিক টন, শনিবার ৩১টি ট্রাকে ৭২১ মেট্রিক টন এবং রবিবার পাঁচটি ট্রাকে ১০৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভোমরায় প্রবেশ করেছে। তবে এখনও ৪০টি পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক বন্দরে আটকা পড়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভোমরা স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম। ছাড়পত্র থাকলেও ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর ট্রাকগুলো সীমান্ত অতিক্রম করতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘ট্রাকগুলো প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘোজাডাঙ্গায় আটকে থাকার কারণে বেশির ভাগ পেঁয়াজই পচে গেছে।’
নগরীর বাসিন্দারা বলছেন, শুধু পেঁয়াজ নয়, বাজারে বেশির ভাগ সবজির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
পুরান ঢাকার বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আলু ৪০ টাকা কেজি, টমেটো ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা এবং গাজর ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যারা এসব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে কারসাজি করে সরকারের উচিত সেই সব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।’