বন বিভাগ সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে বাগেরহাটে ১ হাজার ১০৫টি গাছ ও ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯১৫টি চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সদর, ফকিরহাট, চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ‘বুলবুলের’ আঘাতে ও বৃষ্টিপাতের কারণে প্রধানত চম্বল, শিরীশ ও মেহগনিসহ নানা প্রজাতির অসংখ্য ছোট-বড় গাছ উপড়ে পড়েছে।
বন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাছ ও চারাগুলোর অত্যাধিক ক্ষতির পেছনে চারায় শিকড় না থাকা, রোপণের ক্ষেত্রে সঠিক গাছ নির্ণয় না করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী।
ফকিরহাট উপজেলার লকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. শেখ আলী আহমদ জানান, ঝড়ের সময় তার চারটি বড় গাছ উপড়ে পড়ায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ফকিরহাটের খাজুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, তাদের বিদ্যালয়ের দুটি বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। এখন একটি গাছ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী গ্রামের বাসিন্দা সুদেব বিশ্বাস জানান, কিছু অর্থ উপার্জনের আশায় তিনি তার বাড়ির আঙ্গিনায় গাছের চারা রোপণ করেছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের সময় তার চারটি গাছ উপড়ে গেছে এবং তার মতো এমন বেশ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বাগেরহাটের সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আবুল কালাম বলেন, বেশির ভাগ বেসরকারি নার্সারিতে চারা গাছের জন্য মাটির পাত্র ব্যবহার করা হয়, যাতে মূল শিকড়গুলো সঠিকভাবে বাড়তে পারে না।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফও মো. মাহমুদুল হাসান এ অঞ্চলে বেশি করে ঝাউ ও বাবলা গাছ লাগানোর কথা বলছেন।
বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহ আলম ফরাজী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাগেরহাটের মাটি লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে গাছের শিকড় মাটির গভীরে যাচ্ছে না এবং মাটি তার উর্বরাশক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, শিরীশ ও চাম্বল গাছ তাদের উচ্চতা ও প্রচুর শাখার কারণে ঝড়ের সময় দুর্বল হয়ে পড়ে।
তিনি জানান, বাগেরহাট অঞ্চলে গাছের শিকড় গভীরে না গিয়ে সমান্তরালে যায় কারণ এখানে অল্প মাটির পরই পানির স্তর পাওয়া যায়।