চলতি বছর মাগুরার চার উপজেলায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার চার উপজেলার মধ্যে শ্রীপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। ফলে জেলার কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।
কৃষি বিভাগ বলছে, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে বেশি লাভবান হবে।
জেলায় মোট পেঁয়াজ চাষ হয়েছে দশ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে সদরে এক হাজার ১৯০ হেক্টর, শ্রীপুরে ছয় হাজার ৩৫০, শালিখায় এক হাজার ১৪০ এবং মহম্মদপুরে এবং হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এবার হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ১৪ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১.৪৭ টন।
জেলায় এবার বারী ১, ৪, তাহেরপুরী, লাল তীর, সুপার এবং কিং জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের মর্কদ্দখোলা গ্রামের পেঁয়াজ চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে জমিতে পেঁয়াজ ভালো হয়েছে। আমি এবার দুই বিঘা জমিতে লাল তীর জাতের পেঁয়াজের আবাদ করেছি। পৌষ মাসের মাঝামাঝিতে জমিতে বীজ বপন করেছি। পাশাপশি সার ও সেচ দিয়েছি। পেঁয়াজের চারা বের হলে জমিতে বাড়তি যত্ন নিয়েছি। সময়মতো সেচ ও সার দেওয়ার ফলে আমার পেঁয়াজ ভালো হয়েছে। চলতি চৈত্র মাসে পেঁয়াজ জমি থেকে তুলতে শুরু করেছি। এবার বিঘায় ৮০-৯০ মণ পেঁয়াজ পাব বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বীজ, সারসহ সব মিলিয়ে আমার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন প্রতি মণ পেঁয়াজ ৯৫০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলনে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হতে পারে।’
উপজেলার জয়নগর গ্রামের নির্মলকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমি এবার সুপার জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছি। ভালো ফলন পেয়েছি। এ জাতের পেঁয়াজের রঙ, আকার ও গঠন খুবই ভালো। এটি দেশি জাতের পেঁয়াজের মতো। আশা করছি ভালো আয় করতে পারব।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন, ‘এবার আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকার কারণে জেলায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকার কারণে পেঁয়াজ চাষিদের কোনো ক্ষতি হয়নি। পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে জেলার চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। আগামীতে এ চাষের জন্য জেলার কৃষকদের আরও উদ্বুদ্ধ করা হবে।’