শনিবার সকালে ব্রিটেনের মানুষ ঘুম থেকে জেগে উঠেছেন এক নতুন যুগে যেখানে - ব্রেক্সিট সমর্থকদের ভাষায় - যুক্তরাজ্য 'স্বাধীন' দেশ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অংশ নয়, ইউরোপের মূলভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণহীন অভিবাসন আর হবে না, ইইউর তহবিলে যুক্তরাজ্যকে শত শত কোটি পাউন্ড চাঁদা দিতে হবে না, যুক্তরাজ্য কোনো দেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে তার ওপর ব্রাসেলসের খবরদারি থাকবে না, যুক্তরাজ্যের আইনের ওপর থাকবে না ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের কর্তৃত্ব, ব্রিটিশ জেলেরা তাদের সমুদ্রসীমায় ইচ্ছামতো মাছ ধরতে পারবে - ইত্যাদি।
একটু ভুল হলো। এগুলো কিছুই আসলে শনিবার সকাল থেকে কার্যকর হয়নি। এখনো সব কিছু আগের মতোই থাকবে, অন্তত এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ওপরে যা বলা হয়েছে, সেগুলো কার্যকর হবে ২০২১ সাল থেকে, যদি তার আগে ব্রিটেনের সাথে ইউরোপের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কী হবে তার চূড়ান্ত চুক্তি হয়ে যায় - তবেই।
সাতচল্লিশ বছর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকার পর ব্রিটেনের এই বিদায় - যা আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করেছেন ব্রেক্সিট-সমর্থকরা।
আর যারা ছিলেন 'রিমেইনার' অর্থাৎ ইইউতে থাকার পক্ষে - তাদের কাছে শুক্রবার ছিল এক শোকের দিন।
অনেক বিশ্লেষকই বলেছেন, যুক্তরাজ্য আর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের 'বিবাহ' কোন কালেই ঠিক সুখের ছিল না।
লেবার পার্টির এমপি হিলারি বেন বিবিসিকে বলেছেন, ব্রিটেন ছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এক 'অনিচ্ছুক' সদস্য। তারা ইইউতে যোগ দিয়েছিল অনেক পরে, আর বিদায়ও নিয়েছে সবার আগে।
বেন বলেন, গত রাতটি তার জন্য ছিল দু:খের, কিন্তু একে মেনে না নিয়ে উপায় নেই।
ব্রেক্সিট মেনে নেয়নি যুক্তরাজ্যের অংশ স্কটল্যান্ড। তাদের চিফ মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জেন বলেছেন, স্কটল্যান্ড একদিন স্বাধীন দেশ হিসেবে ইউরোপের কেন্দ্রে ফিরে আসবে। উত্তর আয়ারল্যান্ডে - যাদের সাথে ইউরোপের অংশ আইরিশ প্রজাতন্ত্রের স্থলসীমান্ত আছে - সেখানে আরমাগ সীমান্তে একটি ব্রেক্সিটবিরোধী গ্রুপ বিক্ষোভ করেছে।