ব্রেক্সিট
ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ও অন্য ইন্দো প্যাসিফিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য: সারাহ কুক
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সোমবার (৯ অক্টোবর) বলেছেন, তারা একটি মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিককে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেখানে সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা হয় এবং দেশগুলো জবরদস্তি, বিভ্রান্তি ও হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থেকে পছন্দের পথ বেছে নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম নিয়মতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বহাল রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাজ্য। আমরা সেই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ এবং আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’
হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্যের লক্ষ্য হলো একটি মুক্ত ও অবাধ ইন্দো প্যাসিফিক; এমন একটি অঞ্চল যা নিরাপদ ও স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধি ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম।
সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক এবং বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় ‘ডিফাইনিং কম্পিটিশন ইন দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক’- শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে হাইকমিশনার এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এবং বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুরও বক্তৃতা করেন।
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ কপ২৬ এর আগে বিশ্বব্যাপী উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়াতে অংশীদারিত্বে কাজ করেছে।
ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তারা চলতি বছরের মার্চ মাসে সই হওয়া যুক্তরাজ্য/বাংলাদেশ জলবায়ু চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতিগুলোকে কাজে পরিণত করার জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য: প্রধানমন্ত্রীকে সারাহ কুক
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের অভিযোজন, প্রশমন ও জলবায়ু অর্থায়নের পাশাপাশি লস অ্যান্ড ড্যামেজে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।’
জলবায়ু-সংক্রান্ত সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ চালানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে ভূমিকা স্থিতিশীল, দীর্ঘমেয়াদি ও আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা পরিচালিত হবে। যেমন আসিয়ান কেন্দ্রীয়তা।
তিনি বলেন, ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও কার্যকর অংশীদারিত্ব আমাদের লক্ষ্য অর্জনের মূল চাবিকাঠি। আমরা ইন্দো প্যাসিফিকের আঞ্চলিক অংশীদার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এবং তাদের মাধ্যমে কাজের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
উদাহরণস্বরূপ- ২৫ বছরে আসিয়ানের প্রথম নতুন সংলাপ অংশীদার আমরা এবং সিপিপিপিপি-তে আমাদের সদস্য পদ রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘একইভাবে আমরা আইআরএ এবং বিমসটেক-এর মতো অন্যান্য আঞ্চলিক উদ্যোগগুলোকে বঙ্গোপসাগরে বাস্তব পরিবর্তন আনতে সাহায্য করতে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব অনন্য ও মূল্যবান সম্পর্ক। এ সম্পর্ক দুই দেশের প্রবাসী, সাংস্কৃতিক, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে সুসংহত।
সারাহ কুক বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করছি। জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য থেকে শুরু করে সামুদ্রিক নিরাপত্তা, নিয়ম ও কানুনের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা পর্যন্ত।’
তিনি তিনটি মূল ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেছেন। সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন; নিয়মতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার (আরবিআইএস) গুরুত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্য: সারাহ কুক
১৯৭১ সালে বিশ্বের দ্বিতীয় দরিদ্রতম দেশ থেকে বাংলাদেশ এখন ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য এই সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হতে পেরে গর্বিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন একটি আধুনিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে উন্মুখ, যা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং অর্থনীতিকে টেকসই করতে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সংস্কার ও রপ্তানি বহুমুখীকরণকে সমর্থন করে।’
যুক্তরাজ্যের নতুন ডেভেলপিং কান্ট্রিস ট্রেডিং স্কিম ২০২৯ সাল পর্যন্ত অস্ত্র ছাড়া সব কিছুতেই যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দেবে এবং তারপরে ৯৮ শতাংশ পণ্যের জন্য যুক্তরাজ্যের বাজারের প্রবেশাধিকার দেবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ডিসিটিএস হলো সবচেয়ে উদার বৈশ্বিক বাণিজ্য অগ্রাধিকার প্রকল্প এবং বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী।’
কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত না করে এবং এগিয়ে না নিয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন ও সমৃদ্ধি গড়ে তোলা অসম্ভব হবে।
হাইকমিশনার বলেন, ভারতের সঙ্গে একত্রে যুক্তরাজ্য বঙ্গোপসাগরের জন্য একটি রিজিওনাল মেরিটাইম সেন্টার অব এক্সিলেন্স তৈরি করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সমগ্র অঞ্চলের মেরিটাইম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে অপরাধ মোকাবিলা থেকে শুরু করে ঝড়ের আগাম সতর্কতা প্রদান প্রভৃতির মাধ্যমে কেন্দ্র উপসাগরের স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করতে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে নৌ সহযোগিতার দীর্ঘ ঐতিহ্য আমাদের স্থায়ী সম্পর্কের ভিত্তি।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য চাপ অব্যাহত রাখছে যুক্তরাজ্য
ইইউ-যুক্তরাজ্যের বিশাল বাণিজ্য চুক্তি প্রকাশ, কার্যকর ১ জানুয়ারি
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাজ্য শনিবার জনসম্মুখে এক বিশাল চুক্তি প্রকাশ করেছে। পরস্পরের মধ্যে ভবিষ্যত ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য এটি কার্যকর হবে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে।
ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায়
ব্রেক্সিট হয়ে গেছে, শুক্রবার ব্রিটেনের সময় রাত ১১টায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে গেছে যুক্তরাজ্য। খবর বিবিসির।
ইইউর সাথে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ হচ্ছে শুক্রবার
ব্রিটেন আজকের শুক্রবার দিনটি শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হিসেবে। কিন্তু দিনটি যখন শেষ হবে তখন আর এ মর্যাদা থাকবে না দেশটির।
ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু
সংসদ ভেঙে দেয়ার আনুষ্ঠানিক অনুমতি চাওয়ার জন্য রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সাথে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সাক্ষাৎ করার পর বুধবার দেশটিতে আগামী সাধারণ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট চুক্তিতে ক্ষতি হবে ৯ হাজার কোটি ডলার
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ব্রেক্সিট চুক্তির সমালোচনা করে দেশটির এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে যে তাদের অর্থনীতির আকার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকার তুলনায় সাড়ে ৩ শতাংশ কমে যেতে পারে।
ব্রেক্সিটের জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছে ইইউ
ব্রাসেলস, ২৮ অক্টোবর (এপি/ইউএনবি)- ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রেক্সিটের সময় পিছিয়ে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি নিয়ে যেতে রাজি হয়েছে। আগের নির্ধারিত সময়ে ব্রেক্সিট হতে যাওয়ার মাত্র তিন দিন আগে সোমবার ইইউ এ সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে।
১২ ডিসেম্বর আগাম নির্বাচন চান যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী
লণ্ডন, ২৫ অক্টোবর (ইউএনবি)- বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, তিনি পার্লামেন্টকে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানাবেন।
ব্রেক্সিট সিদ্ধান্তে সময় চেয়ে ইইউকে ব্রিটেনের চিঠি
লন্ডন, ২০ অক্টোবর (এপি/ইউএনবি)- ব্রেক্সিট থেকে যুক্তরাজ্যের বেড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় পেছানোর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে আবেদন জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। পাশাপাশি এ রকম সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আলাদা একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ব্রেক্সিট: চুক্তির পক্ষে সাংসদদের ভোট আদায়ে চেষ্টায় বরিস জনসন
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর (ইউএনবি)- যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে করা ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) চুক্তির পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য শেষ মুহুর্তে সাংসদদের রাজি করানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন।