জাতিসংঘের (ইউএন) ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (কপ-২৮) সম্মেলনের ২৮তম অধিবেশন শুরু হয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত এবার সম্মেলনের আয়োজক। দেশটির দুবাই শহরে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এই বছরের জলবায়ু সম্মেলনটি বিশেষভাবে বিশ্ববাসীর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কারণ গ্লোবাল স্টকটেকের মূল্যায়নের সময় এসে গেছে। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অনুযায়ী এবারই প্রথম বিশ্বের সামগ্রিক অগ্রগতির দ্বিবার্ষিক মূল্যায়নই (স্টকটেক) হচ্ছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে কপ-২৮ এর সভাপতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ আল জাবের বলেন, ‘গ্লোবাল স্টকটেকের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নতুন পথচলা শুরু হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির ভবিষ্যৎ কী হবে, এটা থাকবে এবারের সম্মেলনে আলোচনার মূল বিষয়। এটি এমন একটি সিদ্ধান্ত যা কার্যকর করতে, ত্রুটিগুলো সংশোধন করতে এবং ২০৩০ পর্যন্ত পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে সহায়তা করবে।’
আল জাবের বিশ্ব নেতাদের কাছে একটি সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি জীবাশ্ম জ্বালানির ভবিষ্যৎ বিষয়ে বৈশ্বিক মূল্যায়নের উপর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং এজেন্ডাগুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কপ-২৮ সম্মেলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এই প্রেসিডেন্সি (সবুজ) অর্থায়ন শুরু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের দক্ষিণাংশের দেশগুলোর আর উন্নয়ন ও জলবায়ু কর্মকাণ্ডের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে না।’
তিনি সমাধানের জন্য সব পক্ষকে এগিয়ে আসার এবং ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনের নির্বাহী সেক্রেটারি সাইমন স্টিয়েল বলেন, ‘আমরা ছোট ছোট পদক্ষেপ নিচ্ছি। অস্থিতিশীল বিশ্ব থেকে খুব ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। তবে, বর্তমানে আমরা যে জটিল প্রভাবগুলোর (জলবায়ু পরিবর্তনের) সম্মুখীন হচ্ছি তা সমাধানের সর্বোত্তম প্রতিক্রিয়া তৈরি করার জন্য স্থিতিস্থাপকতার অভাব রয়েছে।’
তিনি দ্রুত প্রাসঙ্গিক পদক্ষেপ নেওয়ার এবং একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তরের জন্য দৃঢ় আহ্বান জানানোর সময় জাতিসংঘের এই জলবায়ু কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, ‘দেশের মধ্যে এবং এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সম্পর্কে ন্যায়বিচার’ নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও সতর্ক করেছেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫-ডিগ্রি সীমা অতিক্রম করার আগে পৃথিবীর কার্বন নির্গমন সহ্য করার ক্ষমতা শেষ হওয়ার আগে আমাদের হাতে এখনও প্রায় ছয় বছর আছে।’
এবারের কপ-২৮ সম্মেলন পৃথিবী ও সমস্ত মানবজাতির মুখোমুখি থাকা জলবায়ু সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ৭০ হাজারেরও বেশি প্রতিনিধিকে স্বাগত জানাবে।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ এর আগেই জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের সুপারিশ সংসদীয় কমিটির
সংসদ সদস্যদের গোলটেবিল বৈঠক: কপ-২৮ এর আগে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ককাস গঠনের প্রস্তাব