আগুন লাগার এক দিন পরও হংকংয়ের তাই পো এলাকার বহুতল ওয়াং ফুক কোর্ট ভবন কমপ্লেক্স থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরেও ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এই আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিকাণ্ডে ইতোমধ্যে ৫৫ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীও আছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭০ জন।
হতাহতের ব্যাপারে আজ (বৃহস্পতিবার) কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঘটনাস্থল থেকে ৫১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কমপ্লেক্সের আটটি বহুতল ভবনের মধ্যে সাতটিতে আগুন লেগেছিল। ইতোমধ্যে চারটি ভবনের আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। বাকি তিনটি ভবনের আগুনও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সন্ধ্যার মধ্যে অভিযান শেষ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ফায়ার সার্ভিস।
এ ঘটনায় একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একজন প্রকৌশল পরামর্শদাতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির নাম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট আইলিন চুং বলেছেন, ‘আমরা ধারণা করছি, নির্মাণ কোম্পানিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের গুরুতর অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
ভবন কমপ্লেক্সের সংস্কার কাজের দায়িত্বে থাকা প্রেস্টিজ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কার্যালয়ও আজ (বৃহস্পতিবার) তল্লাশি করেছে পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে থেকে নথিপত্রভর্তি বাক্স জব্দ করা হয়েছে। তবে প্রেস্টিজের অফিসে ফোন করা হলেও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের সেই ফোনকলে কেউ সাড়া দেয়নি।
কর্তৃপক্ষের ধারণা, বহুতল ভবনগুলোর বাইরের দেওয়ালে এমন কিছু নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল, যেগুলোর অগ্নিরোধী মান ছিল না। এ কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডের পরও অক্ষত থাকা পাশের একটি ভবনের প্রতিটি তলার লিফট লবির জানালার পাশে স্টাইরোফোম পেয়েছে পুলিশের তদন্ত দল, যা অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ। ধারণা করা হচ্ছে, নির্মাণ কোম্পানিই এগুলো লাগিয়েছিল, কিন্তু এসব স্টাইরোফোম ব্যবহারের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। এগুলো নিয়ে আরও তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন হংকংয়ের নিরাপত্তা সচিব ক্রিস ট্যাং।