মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বব্যাংকের ১৩তম প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস স্থানীয় সময় বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এর পরপরই বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক ঘোষণায় জানায়, চলতি ২০২৩ সালেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে।
ডেভিড ম্যালপাস ২০১৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক মনোনীত হয়ে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের (ডব্লিউবিজি) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রাক্তন সিনিয়র কর্মকর্তা।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম লিঙ্কডইন-এ দেয়া একটি পোস্টে ম্যালপাস বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই তিনি জুনের মধ্যে পদত্যাগ করতে চান।
অধুনা-লুপ্ত বিনিয়োগ ব্যাংক বিয়ার স্টার্নসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যালপাস লিখেছেন, ‘আমার মেয়াদকালে আমরা যা অর্জন করেছি, তার জন্য আমি গর্বিত।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শনিবার ঢাকায় আসছেন
তিনি লিখেছেন, ‘আমরা দারিদ্র্য হ্রাস করতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে, সরকারি ঋণের বোঝা কমাতে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, সামাজিক সুরক্ষা ও চাকরি, লিঙ্গসমতা এবং বিশুদ্ধ পানির সরবরাহসহ মানব উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে কঠোর পরিশ্রম করেছি।’
ম্যালপাসের নেতৃত্বে, বিশ্বব্যাংক গ্রুপ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দ্বিগুণেরও বেশি জলবায়ু অর্থায়ন করেছে, যা ২০২২ সালে রেকর্ড ৩২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ম্যালপাস বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সক্ষমকরণ ও বৃদ্ধির প্রচেষ্টারও নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার মেয়াদকালে বিশ্বব্যাংক অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য সহায়তা বাড়িয়েছে, একটি মহামারি তহবিল চালু করেছে এবং একটি জলবায়ু পরিবর্তন কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে।
অন্যান্য অর্জন তুলে ধরে ম্যালপাস কোভিড-১৯ মহামারির প্রতিক্রিয়ায় গ্রুপের ১৫০ বিলিয়ন ডলার এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ও এর স্পিলওভার প্রভাবের জন্য ১৭০ বিলিয়ন ডলার প্রতিক্রিয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘আমি অধীর আগ্রহে অর্থনীতি, ব্যবসা, উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’
ম্যালপাস আরও লিখেছেন, ‘আমি আমার ক্যারিয়ারজুড়ে মানুষের জীবন এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার উপায় খুঁজেছি।’
১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনপ্রশাসন, অবকাঠামো, কৃষি আর্থিক ও বেসরকারি খাতের উন্নয়ন এবং পরিবেশগত ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগে সহায়তা করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে স্বল্প সুদে ও বিনা সুদে ঋণ এবং অনুদান প্রদান করে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার ঢাকা আসছেন