ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার কারণে সোমবার সেখানকার স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুর্যোগময় এই পরিবেশে গত তিন দিনে অন্তত ১৫ জন মারা গেছেন।
ভারতের সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নয়াদিল্লির কিছু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে এলাকাবাসী ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন। হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড রাজ্যে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ১০ জনের মৃত্যুসহ উত্তরের পার্বত্য রাজ্যগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
নয়াদিল্লিতে একজন এবং কাশ্মীরের ভারত নিয়ন্ত্রিত অংশে চারজন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট চলাকালীন সহিংসতায় নিহত ৯
হিমালয়ের পর্যটন রাজ্য উত্তরাখণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভূমিধসের ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। যার ফলে এলাকাবাসীদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। প্রতিবেশি হিমাচল প্রদেশে সেতু ও ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ার সময় কর্তৃপক্ষ লোকজনকে উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে।
ভারতের আবহাওয়া সংস্থা আগামী দিনগুলোতে উত্তরাঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। এতে বলা হয়, সারাদেশে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ভারতে বর্ষা মৌসুমে নিয়মিত মারাত্মক বন্যা দেখা যায়, যা জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়ে থাকে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের বেশিরভাগ অংশ এই এলাকাতে হয়। মৌসুমে রোপণ করা বৃষ্টি-নির্ভর ফসলের জন্য বৃষ্টিপাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে প্রায়শই এর কারণে বেশ ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯০ জনের বেশি নিহতের ঘটনায় ৩ রেল কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে মৌসুমি বায়ু আরও অনিয়মিত হয়ে উঠছে, যার ফলে ভারতের হিমালয়ের উত্তরাঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা হচ্ছে।
প্রতিবেশি পাকিস্তানও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কবলে পড়েছে। ভারত থেকে পাকিস্তানে প্রবাহিত রবি নদীতে ভারত বাঁধের পানি সরিয়ে নেওয়ার পরে কর্তৃপক্ষ মৌসুমের প্রথম বন্যার জন্য সতর্ক ছিল।
পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের নিম্নাঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। নারওয়াল ও শিয়ালকোটের গ্রামগুলো থেকে রাতারাতি ১৫০ জনেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ২৫ জুন থেকে পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আবহাওয়াজনিত বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা