পর্যবেক্ষক গ্রুপ অ্যাসিট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স এর তথ্য অনুযায়ী, রবিবার মিয়ানমারে মোট ৩৮জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে যা ৩ মার্চ এর বিক্ষোভে নিহত সংখ্যার সমতুল্য।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর গুলিতে একদিনে নিহত ৩৮: জাতিসংঘ
অধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, সারাদেশে প্রতিদিন অব্যাহত সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ থামাতে নিরাপত্তা বাহিনী ১২০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার লাইংথাইয়া শিল্প এলাকায় চীনা অর্থায়নে পরিচালিত কয়েকটি কারখানায় আগুন দেয়ায় বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সেখানে ২০ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছে।
সামরিক অভ্যুত্থানের পরে এই প্রথম রবিবার লাইংথাইয়া ও প্রতিবেশী শ্বেপিথিতর জনপদে সামরিক আইন ঘোষণা করা হয়েছে। পরে সোমবার নগরীর আরও চারটি জনপদে সামরিক আইন ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার বাহিনীর হাতে বিভিন্ন শহরে নিহত ১৮: জাতিসংঘ
এই ঘোষণার মাধ্যমে সেনাবাহিনী আরও জোরালোভাবে ইয়াঙ্গুন অঞ্চলে শাসন জারি করতে পারবে। এই জনপদে সমস্ত প্রশাসনিক ও বিচারিক কর্তৃত্ব প্রয়োগ করার সুযোগ হয়েছে এই ঘোষণার মাধ্যমে যা সম্ভবত আসন্ন দিনগুলিতে প্রতিবাদকারীদের উপর আরও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
রবিবার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে লোকেরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখলে নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তা অবরোধ করে দেয়।
মিয়ানমারের চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, লাইংথাইয়া শিল্প এলাকায় চীনা অর্থায়নে পরিচালিত কয়েকটি কারখানায় রবিবার বিক্ষোভকারীরা অগ্নিসংযোগ ও আক্রমণ করে।
চীন দেশটির নির্বাচিত সরকারকে পতনের বিষয়ে মার্কিন নিরাপত্তা কাউন্সিলের মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রতি অবস্থানকে সম্মতি দেয়ার কারণে কারখানাগুলোতে আক্রমন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় টিভিতে রবিবার রাতে বলেছে, ইয়াঙ্গুনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাগোতে এক পুলিশ অফিসার নিহত হয়েছেন এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান ফর্টিফাই রাইটসের
মিয়ানমারে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ড্যান চুগ এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর আক্রমণাত্মক ও নৃশংস ব্যবহার ব্রিটিশ সরকারকে ‘হতবাক’ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার এবং সামরিক সরকারকে মিয়ানমারের জনগণের দ্বারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
নাগরিক শাসন পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চি-সহ নির্বাচিত নেতাদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।