যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য বিমানে উঠার একদিনের মধ্যে বিমানযাত্রীদের বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ শনাক্ত হওয়ার নিয়ম বাতিল হতে যাচ্ছে। রবিবার সকাল থেকেই এই বাধ্যবাধকতা উঠে যাচ্ছে বলে বাইডেন প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র শুক্রবার ঘোষণা করেছে, করোনা টেস্টের প্রয়োজনীয়তা রবিবার সকালেই শেষ হবে।
স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এটি মহামারির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকবে এবং পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার পুনরায় মূল্যায়ন করবে।
ইউএস হেলথ সেক্রেটারি জেভিয়ার বেসেরা বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে আমরা যে অগ্রগতি করেছি। তার কারণে এই পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়েছে।’
এয়ারলাইন্স এবং পর্যটন সংস্থাগুলি করোনা পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বাতিল করার জন্য কয়েক মাস ধরে প্রশাসনকে চাপ দিয়ে আসছিল। তারা বলেছে, এটি লোকেদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বুকিং থেকে নিরুৎসাহিত করে। কারণ ভ্রমণের সময় করোনায় আক্রান্ত হলে তারা বিদেশে আটকে পড়তে পারে এই আশঙ্কায় থাকে।
ইউএস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রজার ডাও করোনা পরীক্ষার নিয়ম তুলে নেয়াকে ‘অভ্যন্তরীণ বিমান ভ্রমণের পুনরুদ্ধার এবং যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের প্রত্যাবর্তনের জন্য আরেকটি বিশাল পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন।
এয়ারলাইন্স যুক্তি দিয়েছিল যে নিয়মটি কার্যকর করা হয়েছিল যখন কিছু আমেরিকানকে টিকা দেয়া হয়েছিল। এখন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থার (সিডিসি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ৫ এবং তার বেশি বয়সীদের ৭১ শতাংশকে সম্পূর্ণরূপে টিকা দেয়া হয়েছে। স্থল সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের করোনার নেগিটিভ শনাক্তের জন্য পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই, যদিও তাদের অবশ্যই টিকা দেয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে।
যেখানে অভ্যন্তরীণ মার্কিন ভ্রমণ প্রায় প্রাক-মহামারি স্তরে ফিরে এসেছে, সেখানে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ , যা এয়ারলাইন্সগুলির জন্য খুব লাভজনক - পিছিয়ে রয়েছে।
ট্রেড গ্রুপ এয়ারলাইন্স ফর আমেরিকা অনুসারে, গেলো মে মাসে মার্কিন আন্তর্জাতিক বিমান ভ্রমণ ২০১৯ স্তরের ২৪ শতাংশ নীচে ছিল। মার্কিন ও বিদেশি উভয় নাগরিকের মধ্যে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ হ্রাস পেয়েছে।
অন্যান্য অনেক দেশ পর্যটন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের প্রায় সব নাগরিককে টিকার আওতায় এনেছে এবং ভ্রমণকারীদের জন্য তাদের পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে নিয়েছে।
কিছু সংক্রামক-রোগ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, তারা সিডিসির সিদ্ধান্তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন এবং এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসের আর বিস্তার ঘটার সম্ভাবনা নেই।
ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির ডক্টর উইলিয়াম শ্যাফনার বলেছেন, নিয়মটি তৈরি করা হয়েছিল ভাইরাস আমদানি রোধ করার জন্য। ‘তবে আমাদের এখানে প্রচুর পরিমাণে কোভিড রয়েছে। এটা কাউকে তাদের সুইমিং পুলে এক বালতি জল না ঢালতে বলার মতো।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে সহকর্মীর গুলিতে নিহত ৩