সমৃদ্ধির সহায়ক শিক্ষাব্যবস্থা, সুষ্ঠু পরিবেশ এবং উন্নত জীবন ধারণের মতো সম্ভাবনাগুলোর দ্বার উন্মোচন করে উচ্চশিক্ষা। এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার সর্বোচ্চ আদর্শ মান বজায় রাখা উন্নত বিশ্বের দেশগুলো আকৃষ্ট করে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের। বিগত কয়েক দশক জুড়ে পৃথিবীর প্রথম সারির বিদ্যাপীঠগুলোর আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ৯৯ শতাংশ শিক্ষার হার নিয়ে সগর্বে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছে শৈল্পিক দেশ ফ্রান্স। বিশ্বের নানা প্রান্তের শিক্ষার্থীদের মতো বাংলাদেশের মেধাবীদেরও প্রতি বছর স্বাগত জানাচ্ছে দেশটি। চলুন, ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দেশটিতে আবেদন ও খরচসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষার যোগ্যতা
অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে আবেদনকারীর পূর্ববর্তী ডিগ্রি থেকে ন্যূনতম ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ মার্কস নেওয়া হয়।
মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য পূর্বে ডিগ্রিগুলো একই বা প্রাসঙ্গিক বিষয়ে থাকতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিন্ন একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকার পরেও অতিরিক্ত ক্রেডিট কোর্সের মাধ্যমে সমন্বয় করা হয়। পিএইচডির জন্য আলাদাভাবে প্রয়োজন হয় একই বিষয়ে গবেষণার অভিজ্ঞতা ও প্রকাশনার। এ ছাড়া সেমিনার ও কনফারেন্সের মতো পাঠ্যক্রম বহির্ভূত ক্রিয়াকলাপ অতিরিক্ত মান সংযোজন করে।
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
এমবিএর ক্ষেত্রে ফ্রান্সের শীর্ষ বিজনেস স্কুলগুলোতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। প্রাথমিক নিরীক্ষণে মূল্যায়ন করা হয় জিআরই কিংবা জিম্যাটের স্কোরকে।
সাম্প্রতিক শিক্ষাবর্ষগুলোতে পাঠদানের মাধ্যম হিসেবে ইংরেজিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যবস্থাপনা, প্রকৌশল, ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোর ক্লাস ইংরেজিতেই করানো হয়। তাই ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য প্রয়োজন হবে টিওইএফএল এবং আইইএলটিএস।
তবে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরও বেশি বিকল্প পেতে হলে ফরাসি ভাষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিদেশি এই ভাষার দক্ষতা খণ্ডকালীন চাকরি এবং পড়াশোনা শেষে ভালো চাকরি পাওয়ার জন্যও অপরিহার্য।
আরো পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রান্সের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সগুলো
ফ্রান্সের পাবলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে জগৎজোড়া খ্যাতি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- টুলুজ, গ্রেনোবল ও বোর্দোর জাতীয় পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এবং লিলি, লিয়ন, মার্সেই ও নান্টেসের সেন্ট্রাল স্কুল।
লিয়ন, রেনেস, টুলুস, রুয়েন, স্ট্রাসবার্গ ও সেন্টারভাল ডি লোয়ারের প্রত্যেকটি স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
কম্পিয়েনি, বেলফর মন্টবেলিয়ার ও ট্রয়াতে রয়েছে একটি করে টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়।
প্যারিস, ক্যাচান, লিয়ন ও রেনেসে আছে ৪টি হায়ার এডুকেশন ইন্সটিটিউট।
আরো পড়ুন: সুইডেনে স্কলারশিপ পাওয়ার কিছু উপায়
২০টি জাতীয় ইন্সটিটিউটের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- কলেজ ডি ফ্রান্স, ন্যাশনাল কনজারভেটরি অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওরিয়েন্টাল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড সিভিলাইজেশন এবং স্কুল অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সাইন্স।
এগুলোসহ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয়গুলো হচ্ছে পরিবেশ, ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায় প্রশাসন, অর্থায়ন, কৃষিবিদ্যা, জীববিদ্যা, কলা, সংস্কৃতি, নকশা ও ফ্যাশন।