রপ্তানির সঙ্গে সম্পৃক্ত কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন(বিজিএমইএ)।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বৈশ্বিকভাবে জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকট এবং দেশে তৈরি পোশাক শিল্পে প্রভাব পড়ার কথা স্বীকার করে এই অনুরোধ জানান।
শনিবার বিজিএমইএ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ সম্পর্কে বক্তব্য রাখার সময় এ অনুরোধ জানান তিনি।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম(অর্থ) এবং সংগঠনটির পরিচালকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন(বিজিএমইএ)এর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১২-১৮ নভেম্বর ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ আয়োজন করা হবে। যাতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের চিত্তাকর্ষক গল্পসমূহ ও উৎকর্ষ সাধনের ক্রমাগত প্রচেষ্টাগুলো তুলে ধরা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ নভেম্বর ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ -এর উদ্বোধন করবেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এই শিল্প ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত এক বছর নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদনের প্রত্যক্ষ সাক্ষী।
‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে ধীরে ধীরে আমাদের কাজের আদেশগুলো বাতিল হয়ে যাচ্ছে,’ উল্লেখ করে বিজিএমইএ প্রধান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশের রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে সম্ভাব্য মন্দা ও মূল্যস্ফীতির কারণে আগামী বছরের কার্যাদেশ ২০-৩০ শতাংশ কমে এসেছে।
ফারুক হাসান বলেন, অনেক খুচরা বিক্রেতা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে এবং অনেক ব্রান্ডের পণ্যের বিক্রির হার কমে যাওয়ার ফলে অবিক্রিত পণ্যের মজুদ বেড়েছে।
বিজিএমইএ প্রধান বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনায় সামনের মাসে আমাদের রপ্তানির ধারাবাহিকতায় নেতিবাচকতা দেখা যেতে পারে।’
আরও পড়ুন: গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির
চলতি অর্থবছরে রপ্তানি মুনাফার ওপর ১ শতাংশ উৎস কর আরোপ করেছে সরকার। বিজিএমইএ প্রধান সরকারকে বিগত বছরের মতো (০.৫ শতাংশ) রাখার অনুরোধ জানান।
সপ্তাহব্যাপী সম্মেলনের এই আয়োজনে মেলা, প্রদর্শনী, পুরস্কার, কারখানা ভ্রমণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নেটওয়ার্কিংসহ শারীরিক ইভেন্ট উপস্থাপন করা হবে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এটি একটি সাংকেতিক ঘটনা। বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পোশাক রপ্তানি করে দেশটি।
মেড ইন বাংলাদেশ উইক’-এর লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতের সম্ভাবনা এবং রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা ও সহযোগিতা শুরু করতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সকল মালিকদের একত্রিত করা।
এছাড়াও, টেকসই এবং দায়িত্বশীল ব্যবসা সম্প্রসারণে সম্মিলিত প্রতিশ্রুতির জন্য আয়োজনটি কাজ করবে।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, দেশের পোশাক শিল্পের প্রশস্ততা প্রদর্শনের পাশাপাশি, এই সপ্তাহের লক্ষ্য ভবিষ্যতের অগ্রাধিকার এবং অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতার
সুযোগগুলো চিহ্নিত করা। যাতে বিশ্বব্যাপী পোশাকের সোর্সিংয়ের জন্য একটি পছন্দের গন্তব্য হিসাবে বাংলাদেশ থাকে, তা নিশ্চিত করা।
এতে বলা হয়েছে, মেড ইন বাংলাদেশ উইক হবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি মাইলফলক ঘটনা।
বৈশ্বিক ফ্যাশন বাজারে বাংলাদেশের উপস্থিতি জোরদার করার গুরুত্ব এবং টেকসই উৎপাদন ও সোর্সিংয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৃহত্তর সহযোগিতার সূচনার জন্য, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ বাংলাদেশে ৩৭তম বিশ্ব ফ্যাশন কনভেনশনের আয়োজন করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাক্রেডিটেশন ফোরামকে(আইএএফ) সুপারিশ করেছে।
আইএএফ সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে এবং ৩৭তম বিশ্ব ফ্যাশন সম্মেলন বাংলাদেশে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ -এর সহযোগিতায় ২০২২ সালের ১২-১৫ নভেম্বর -এর মধ্যে ঢাকায় হোটেল রেডিসন ব্লুতে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের প্রচারের আহ্বান বিজিএমইএ’র