তিনি বলেন, ‘একই সাথে তেল আমদানিতে সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে চার স্থানে শুল্ক নেয়ার পরিবর্তে এক স্থানে নেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআরকে) আবারও চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।’
সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সাথে সভা শেষে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেল নিয়ে সারা দেশে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। আমাদের তেলের বাজার ৯০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করে। যখন সেখানে দাম বাড়ে তখন দেশের বাজারেও তার প্রভাব পড়ে। ছয় মাস আগের ৭০০ ডলারের তেল বর্তমানে ১১৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে দেখা যায় ৭৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।
দেশে দাম এতো বাড়েনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটাকে কিভাবে সমন্বয় করা যায়, সেজন্য দাম নির্ধারণের যে কমিটি আছে তাদেরকে বলা হয়েছে তারা চুলছেড়া বিশ্লেষণ করে একটা মানসম্মত দামের তালিকা করে দেবে। কারণ আজকে যে দাম নির্ধারণ করে দেব দুইদিন পর সে দাম কমে গেলে তখন আবার সকলেই লেখালেখি করবে৷’
আরও পড়ুন: রপ্তানি বহুমুখী করতে পিআইএফআইসি কর্মসূচি চালু হয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
‘সেজন্য প্রতিমাসে একটি সভা করে একটি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের আইডিয়া দেবে আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি। তবে এই বিষয়টি সহজ নয়,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সাতদিন পরে কমে গেছে। এজন্য প্রতিনিয়ত ফলোআপ রাখতে হবে। আর একটা বিষয় আজকে যে পণ্যটা বুক করেন সেটা আমাদের দেশে আসতে তিন মাস লাগে। আজকের আমাদের বাজারে কি দাম, সেখানে কি দাম সেটার একটা প্রভাবে বাজারে পড়ে। এসব বিষয়ে নজর রাখার জন্য আমাদের কমিটি, ট্যারিফ কমিশন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ করে একটা উপায় বের করবো।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা করার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
একই সাথে রমজান মাসকে সামনে রেখে শুধুমাত্র তেল বলে নয় সকল পণ্য নিয়ে চিন্তা করছি। রমজানে যাতে মানুষ সাশ্রয়ী দামে পণ্য পায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, জানান মন্ত্রী।
ভোজ্যতেল আমদানি শুল্কের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাবি তোলা হয়েছে ভোজ্যতেলে তিন বা চার স্তরে যে ডিউটি, ভ্যাট, ট্যাক্স নেয়া হয়, সেটা সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে এক জায়গা থেকে নেয়ার ব্যবস্থা করা। এতে করে ব্যবসায়ীদের সময় বাঁচবে, হয়রানি কমবে। পাশাপাশি সরকারেরও রাজস্ব কমবে না। ভোজ্য তেলে আগে ১৫ শতাংশ শুল্ক নেয়া হতো একটা স্থানে। এখন চার জায়গায়। ব্যবসায়ীরা চাচ্ছে সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে সেটা আবার একজায়গায় নিয়ে আসতে।
আরও পড়ুন: আলুর দাম ২-৩ দিনের মধ্যে সরকার নির্ধারিত মূল্যের নিচে নেমে আসবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা আগেই এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। আজকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা আবার চিঠি দেব। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করে এটা একজায়গায় হওয়া উচিত। সেটা করার জন্য আমরা আরও তৎপর হব।
তিনি বলেন, আজকে আমরা মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ব কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি, পণ্যের হাত বদলের কারণে যেন বাজারে প্রভাব না পড়ে। বিশেষ করে খোলা তেলের বিষয়ে। আমাদের বাজারে ৭০ থেকে ৭২ শতাংশ খোলা তেল, বাকিটা বোতলজাত তেল। আরও বেশি বোতলজাত করা গেলে দামের হেরফের কম হবে। উৎপাদন পর্যায়ে ২ শতাংশ, তারপরের ধাপে ৩ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৭ শতাংশ লভ্যাংশের কথা আগে থেকেই ঠিক করা আছে। সেটা যদি তারা পায় তাহলে তার আপত্তি নেই। কমিটি বসে ঠিক করে দেবে।